দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর পর্যটক ও জেলে-বাওয়ালীদের জন্য রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন। তবে রবিবার ও সোমবার এই দুদিনে সুন্দরবন ভ্রমণে তেমন পর্যটক আসেনি এই বনে। কারণ হিসেবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যটক মৌসুম নয়, তাই পর্যটক আসছেন না।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘তিন মাস বন্ধ থাকার পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও তেমন পর্যটক না আসার কারণ হচ্ছে, এখন পর্যটক মৌসুম না। এরপর এখন নদী উত্তাল এবং বর্ষা মৌসুম। আগামী নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই পাঁচ মাস হচ্ছে পর্যটক মৌসুম। এই মৌসুমে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবন উন্মুক্ত করা হলেও প্রথম দুই দিনে ২০০ পর্যটক এসেছেন। এ সময়ে জনপ্রতি ৪৬ টাকা হারে ৯ হাজার ২০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময়ে যেসব পর্যটক এসেছেন তারা সুন্দরভাবে সুন্দরবন উপভোগ করছেন, তারা অনেক খুশি।’
রাজশাহী বিভাগ আসা ইমান আলী নামে এক পর্যটক বলেন, ‘তিন মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবনে ঘুরতে আসলাম। অনেক পশু-পাখি এবং নানারকম গাছপালা দেখলাম। অনেক আনন্দময় সময় উপভোগ করেছি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা থেকে আসা আশরাফ নামে আরেক পর্যটক বলেন, ‘অনেকদিন পর পরিবার নিয়ে সুন্দরবন দেখতে আসলাম। সুন্দরবন যে এত সুন্দর চোখ দিয়ে বাস্তবে না দেখলে জানতাম না। অনেক উপভোগ করছি।’
উল্লেখ্য, ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট এই তিন মাস মূলত বনের গাছপালা, বন্যপ্রাণী-পশুপাখি ও মাছের প্রজনন মৌসুম। এ জন্য এই সময়টাতে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন হওয়ায় এক নতুন রূপে এখন সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি।
বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনের ৩১৯ প্রজাতির মাছ, ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা এবং ১০৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী-পশুপাখির বেশির ভাগেরই প্রজননকাল ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট। এই সময়ে বনের গাছপালার বীজ থেকে চারা গজায়, এতে গাছের সংখ্যা বেড়ে থাকে। আর প্রজননের ফলে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় প্রাণিজ ও জলজ সম্পদ।