অবৈধ অভিবাসীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান অব্যাহত রাখা এবং ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে নিউইয়র্ক স্টেট আইডি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ব্যক্তিগত তথ্য দিতে অপারগতা জানিয়েছে নিউইয়র্কের ডিপার্টমেন্ট অব মোটর ভেহিকেলস (ডিএমভি)। ডিএমভি ২০১৯ সালে প্রণীত ‘গ্রিন লাইট আইন’ রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। আর এর প্রতিক্রিয়ায় আইনটির তীব্র সমালোচনা করে ট্রাম্পের নিযুক্ত বর্ডার জার (সীমান্ত প্রধান) টম হোম্যান নিউইয়র্কের লাইসেন্স প্লেটযুক্ত গাড়িগুলোকে দেশের বাইরে যাওয়া ও প্রবেশে বাধা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি এ আইন বাতিল করার চিন্তা করছেন বলে জানান।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে প্রণীত নিউইয়র্ক স্টেটের ‘গ্রিন লাইট আইন’ অবৈধ অভিবাসীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অধিকার প্রদান করে এবং ডিপার্টমেন্ট অব মোটর ভেহিকেলসকে (ডিএমভি) ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে নিষিদ্ধ করে। এই আইনটি সড়ক নিরাপত্তা ও অভিবাসী সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেও এটি ফেডারেল সরকারের সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতির সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করেছে। টম হোম্যান ডিএমভির কাছে লাইসেন্সের অধিকারীদের তথ্য ফডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ও অবৈধ অভিবাসীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেনে। কিন্তু নিউইয়র্কের ডিপার্টমেন্ট অব মোটর ভেহিকেলস (ডিএমভি) ২০১৯ সালে প্রবর্তিত ‘গ্রিন লাইট আইন’ রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ডিএমভি’র অবস্থান টম হোম্যানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ‘গ্রিন লাইট আইনটি’ অবৈধ অভিবাসীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অধিকার প্রদান করেছে এবং ডিএমভিকে ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে নিষিদ্ধ করেছে। নিউইয়র্ক স্টেট কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এই আইনটি সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং অভিবাসী সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ডিএমভির মুখপাত্র ওয়াল্টার ম্যাকক্লুর এ আইনটির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বলেন, আইনটি সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। কারণ এটি অবৈধ এবং বীমা ছাড়া চালকদের রাস্তায় নামতে নিরুৎসাহিত করে। এ আইনটি প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় পাস হয় এবং এর ফলে ২০২০ সালে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি নিউইয়র্কবাসীদের জন্য ট্রাস্টেড ট্রাভেলার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরে এটি সংশোধন করা হয় এবং সীমিত তথ্য শেয়ারিংয়ের অনুমতি দেওয়া হলেও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তথ্য শেয়ারিং কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকে।
এদিকে ডিএমভির এ সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্পের সীমান্ত প্রধান টম হোম্যান। এই আইনটির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে জানিয়েছেন তিনি নিউইয়র্কের লাইসেন্স প্লেটযুক্ত গাড়িগুলোকে দেশের বাইরে যাওয়া ও প্রবেশে বাধা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। এ আইনটি পরিবর্তন বা বাতিল করতে চান।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল হোম্যানের মন্তব্যকে অদ্ভুত বলে আখ্যা দিয়েছেন। গভর্নর ক্যাথি হোকুলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিনি কখনো চাননি যে, কোনো অবৈধ অভিবাসী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হোক। তবে এসব ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং নিরাপদ সীমান্ত নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও তবে আইনটি পুনর্বিবেচনা করার বিষয়ে গভর্নর সরাসরি কিছু বলেননি।