গ্রিন কার্ড নীতি পরিবর্তনের পরিকল্পনা ট্রাম্পের, বিপাকে কোন দেশের নাগরিকেরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২৩:৪৭


ইউএস হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে একটি নতুন অভিবাসন নীতি প্রস্তুত করছে যা ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য গ্রিন কার্ড এবং অন্যান্য অভিবাসন সুবিধা উল্লেখযোগ্যভাবে কঠিন করে তুলতে পারে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত নির্দেশনাটি এখনও খসড়া পর্যায়ে আছে। নির্দেশনাটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এটি চূড়ান্ত হলে ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস) ট্রাভেল ব্যান বা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকা দেশগুলোর ‘দেশভিত্তিক কারণগুলোকে’ অভিবাসন আবেদন মূল্যায়নের সময় ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক কারণ’ হিসেবে বিবেচনা করবে।

নতুন নীতি কী বদলাতে পারে

প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী-
ইউএসসিআইএস কর্মকর্তারা ভ্রমণ নিষিদ্ধের তালিকায় থাকা দেশগুলোর ‘দেশভিত্তিক ঝুঁকি’ কে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য করবেন।
এই নিয়ম গ্রিন কার্ড, আশ্রয় (অ্যাসাইলাম), প্যারোল এবং আরও কিছু বিবেচনাধীন অভিবাসন সুবিধার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
তবে এটি নাগরিকত্বের (সিটিজেনশিপ) আবেদনগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
বর্তমানে কর্মকর্তারা কমিউনিটি–সম্পর্ক, অপরাধের রেকর্ড ও মানবিক প্রয়োজনের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করেন। নতুন নীতি যোগ হলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আবেদনকারীর জাতীয়তা ভিত্তিক ঝুঁকিও মূল্যায়ন হিসেবে যুক্ত করা হবে।

ট্রাম্পের ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো
জুন মাসের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ১২টি দেশের নাগরিকদের অ্যামেরিকায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়, যাদের মধ্যে অধিকাংশ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ: আফগানিস্তান, মায়ানমার, চাদ, কঙ্গো রিপাবলিক, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, এরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন।
এছাড়া আরও সাতটি দেশ আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এই দেশগুলোর নাগরিকরা স্থায়ীভাবে অ্যামেরিকায় বসবাস করতে বা পর্যটক, শিক্ষার্থী ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। দেশগুলো হচ্ছে- বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান, ভেনেজুয়েলা।

কেন এই দেশগুলো?
ডিএইচএস এর খসড়া নথি অনুযায়ী, বেশ কিছু দেশ যথেষ্ট স্ক্রিনিং বা পরিচয় যাচাইয়ের তথ্য শেয়ার করেন এবং তাদের নির্ভরযোগ্য পাসপোর্ট সুরক্ষা নেই। এছাড়া তারা এমন কাগজপত্র জমা দিতে সক্ষম নয় যা ইউএসসিআইএস সহজেই যাচাই করতে পারে।
সমালোচকরা বলছেন, এই নীতি উল্লেখিত দেশগুলোর সরকারের অক্ষমতার দায়ের জন্য ব্যক্তিদের দোষারোপ করছে। যা রীতিমত অন্যায়ের সামিল।

তবে ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কিছু ব্যক্তি ছাড় পেতে পারেন। যেমন-

  • বিদ্যমান ভিসা থাকা ব্যক্তিরা
  • গ্রিন কার্ডধারী ("বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা")
  • ২০২৬ বিশ্বকাপ বা ২০২৮ লস এঞ্জেলেস অলিম্পিকের জন্য আগত ক্রীড়াবিদ
  • আফগানদের জন্য বিশেষ অভিবাসন ভিসা
  • অ্যামেরিকান সরকারের বিশেষ ভিসাধারী কর্মীরা
  • ইরানের নির্যাতিত কিছু নৃগোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু
  • অ্যামেরিকার জাতীয় স্বার্থে বিশেষ কেস–ওয়েভার পাওয়া ব্যক্তিরা
  • নতুন কোনো ছাড়পত্র না দেওয়া হয় তবে প্রস্তাবিত গ্রিন কার্ড প্রদানের সীমাবদ্ধতা ভবিষ্যতে অনেকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হতে পারে।