গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্সে ইতিবাচক প্রবণতা, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ায় দেশের ডলারের বাজারে স্বস্তি মিলেছে। এখন প্রতি ডলার পাওয়া যাচ্ছে ১২২-১২৩ টাকায়। ব্যাংকের মতো মানি চেঞ্জার পয়েন্টগুলোতেও ঘোষিত দরে লেনদেন হচ্ছে ডলার। আগে নানা কৌশলে অলিগলি, হোটেল-রেস্তোরাঁর চিপাচাপায় ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা হতো। তবু গ্রাহক চাহিদামতো ডলার পেত না বলে অভিযোগ ছিল।
জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। ডলারের জোগানও ভালো। ডলার নিয়ে হইচই নেই। ব্যাংকগুলো ১২০ টাকায় ডলার বিক্রি করছে। আর মানি চেঞ্জিং পয়েন্টগুলোতে প্রতি ডলার ঘোষিত দরে ১২২-২৩ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। অথচ আগে ব্যাংক রেট এবং খোলাবাজারের গড় পার্থক্য ছিল ৫-৭ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা ডলারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩১ মিলিয়ন ডলার, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৭৪৭ মিলিয়ন ডলার। এই হিসাব অনুযায়ী এক মাসে প্রায় ২৮৪ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৯৪ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৬৮৮ কোটি ডলার। এদিকে গত ১৯ নভেম্বর হজে গমনেচ্ছুকদের জন্য মানি চেঞ্জারগুলোর ডলার বিক্রির সীমা ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলারে উন্নীত করার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ১৫ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ব্যাংকগুলো নিজেরাই ডলার কেনাবেচা করতে পারছে। ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বর্তমানে ১২০ টাকা আর খোলাবাজারে ১২২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্যাংকিং চ্যানেল ও খোলাবাজারে ডলারের ব্যবধান এখন ২ টাকা, যা আগে ছিল ৫-৬ টাকা। ডলার পাওয়া যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ এখন আর নেই।
মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এস এম জামান বলেন, ‘এখন ১২১ টাকার মধ্যে কিনে সর্বোচ্চ ১২১.৫০ টাকায় বিক্রি করছি ডলার। এখন দেশে প্রচুর পরিমাণ রেমিট্যান্স আসছে। তাই ব্যাংকে ডলারের সরবরাহ ভালো, যার প্রভাবে খোলাবাজারে স্বস্তি মিলেছে।’