বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে ‘টক্সিক’ বা বিষাক্ত করে তোলার জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে উমামা লেখেন, “ছাত্রশিবির ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলেছে। এরা সাধারণ ছাত্রের ভান করে বারবার প্রকৃত ছাত্রদের কণ্ঠরোধ করেছে। ফলে সুস্থ রাজনৈতিক আলাপচর্চার পরিবেশ তৈরি হতে পারেনি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “অনেকেই এতদিন ছাত্রলীগের ছায়ায় থেকে সুবিধা নিয়েছে, হলে দাপট দেখিয়েছে, আর এখন রাজনৈতিক সুবিধা নিতে ‘আদর্শ সাধারণ ছাত্র’ সেজে অন্যদেরকে ‘ছাত্রলীগের দোসর’ বলে ট্যাগ করছে।”
আসিয়া ধর্ষণ মামলার প্রসঙ্গ টেনে উমামা বলেন, “গত ৮ মার্চ আমরা সুফিয়া কামাল হল থেকে মিছিল করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করি। অনেকক্ষণ হলপাড়ায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিলেও কেউ বের হয়ে আসেনি। অথচ পান থেকে চুন খসলে মিছিল করে এমন অনেকেই তখন নিরব ছিল। এটাই এদের সাধারণ শিক্ষার্থীসুলভ আচরণের প্রকৃত নমুনা।”
তিনি সতর্ক করে লেখেন, “এই বাটপারদের থেকে সাবধান থাকুন। ছাত্রলীগের শাসনামলে যারা লীগের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি, বরং নির্যাতনকে বৈধতা দিয়েছে, তারাই এখন আন্দোলনের ঠিকাদারি করছে। এদের উদ্দেশ্য ছাত্ররাজনীতি নয়, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন।”
উমামা আরও বলেন, “২০২৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের সময় আমরা যখন রাজু ভাস্কর্যে নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছিলাম, তখন এদের কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। বরং তারা তখন ঢাবিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের পেছনে লেগে ছিল। ভোট ডাকাতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর চেয়ে ট্রান্সজেন্ডার কোটা এদের কাছে বড় ছিল।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এখন এই সব তথাকথিত সাধারণ ছাত্ররা ‘জুলাই আন্দোলনের ঠিকাদার’ হয়ে উঠেছে। এদের হাতে আগামী জুলাইও নিরাপদ নয়।”
উমামার এই পোস্টকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে তাঁর বক্তব্যকে সময়োপযোগী ও সাহসী বলে প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ বলেও মন্তব্য করছেন।