নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্তব্য দেওয়ার এখতিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
মঙ্গলবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তর: মৌলিক সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও সংস্কার সমন্বয় কমিটি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা দেখেছি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনীতির মধ্যে একটি নতুন বয়ান দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। সেনাপ্রধান বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। কিন্তু সেনাবাহিনীর এ কথা বলার কোনো সাংবিধানিক এখতিয়ার নেই। তাদের রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “বিএসএফ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশ-ইন করছে, বিভিন্ন দেশের অপারেটিভ গোষ্ঠী দেশে সক্রিয়। কিন্তু সেসব প্রতিরোধ না করে সেনাবাহিনী জনগণকে গুম-খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে, আয়নাঘরে রেখেছে। সংস্কারের যে পথে আমরা এগোচ্ছিলাম, সেনাবাহিনী বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে তা বাধাগ্রস্ত করছে।”
সেনাবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “মিলিটারি ও পলিটিকসকে আলাদা করতে হবে। আর্মড ফোর্সেসের ভেতরেও সংস্কার প্রয়োজন। গত ১৫ বছরে আমরা শুধু ক্যান্টনমেন্টের দালান-কোঠা বড় হতে দেখেছি, কিন্তু অস্ত্রধারণ কিংবা সামরিক মহড়ার কোনো চিত্র দেখিনি। পেট ভারী হয়েছে, কিন্তু প্রস্তুতির অভাব রয়েছে।”
অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এনসিপি নেতা বলেন, “অনেক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। আপনাদের রাজনৈতিক অধিকার থাকলেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আপনাদের জনতার আদালতে দাঁড়াতে হবে।”
নাসীরুদ্দীন আরও বলেন, “আমাদের গণপ্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়েছে। জনগণের প্রতি আহ্বান জানাব, যদি কখনো যুদ্ধ আসে, তাহলে প্রস্তুত থাকুন। গণপ্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন।”
নির্বাচন কমিশন নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের ১০ মাস পার হয়নি, অথচ নির্বাচন কমিশনকে একটি দলীয় অফিসে পরিণত করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে দলীয় এজেন্ট হিসেবে। সাজানো স্ক্রিপ্টে আসন বিন্যাস চলছে। সময় থাকতে সংশোধন না হলে ভবিষ্যতে জনগণ সুযোগ দেবে না।”