ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের জানাজায় মির্জা ফখরুল

ক্রন্দন নয়, জেগে উঠতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৫:১৫

বর্তমান সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে ‘ক্রন্দন নয়, সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান’ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নুরে আলমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন এবং নিহত ছাত্রদল নেতার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এদিন দুপুর ১টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নুরে আলমের মরদেহ নয়াপল্টনে নিয়ে আসেন। এসময় নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ পরে জানাজায় অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ। এরচেয়ে বেদনার, যন্ত্রণার আর কিছু নাই। আমাদের ছেলে নুরে আলমকে গুলি করে হত্যা করেছে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী। গুলি করে হত্যা করেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিমকে। আরও ১৯ জন ঢাকা ও বরিশালে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে নতুন নয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একদলীয় শাসন পোক্ত করতে ১৫ বছর ধরে ছয়শো নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখন আর ক্রন্দন নয়, আমাদের জেগে উঠতে হবে। এই নির্যাতনকারী সরকারের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হওয়া। শান্তিপূর্ণভাবে গণআন্দোলন শুরু করে নুরে আলম এবং রহিম হত্যার প্রতিশোধ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৫-৭ আগস্ট পর্যন্ত শোক পালন করার জন্য বিএনপি সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করবে, কালো পতাকা উত্তোলন করবে। ৬ আগস্ট ছাত্রদল ঢাকায় সমাবেশ করবে, ৭ আগস্ট কৃষকদল সমাবেশ করবে, ৮ আগস্ট যুবদলের সমাবেশ হবে।
গত ৩১ জুলাই সারাদেশে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলায় বিক্ষোভ পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন ছাত্রদল নেতা নুরে আলম। পরে তাকে রাজধানীর গ্রিনরোড কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার (৩ আগস্ট) তিনি মারা যান।
জানাজায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষকদল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপি একাংশের মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজারুল ইসলাম, এনডিপির কারী আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনিসহ ২০ দলীয় জোটের অন্য নেতাকর্মীরাও জানাজায় অংশ নেন।