বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ছাত্রী আনবার নাজাহ (২৬)-এর মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। আমেরিকার আটলান্টাস্থ ইমোরি জোন্স ক্রিক হাসপাতালে মারা গেলেও তার পরিবারকে না জানিয়ে নাজাহর মরদেহ দাফন করে ফেলে তার স্বামী ডেভিড উ নিউবাই।
উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ২০২৩ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান আনবার নাজাহ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ডেভিড উ নিউবাই নামক এক আমেরিকানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এর পর থেকেই আটলান্টার জোন্স ক্রিক সিটিতে স্বামীর সঙ্গে বাস করে আসছেন। নাজাহর বাবা ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা জাকিউর রহমান জিতু।
আটলান্টাস্থ সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়া’ এবং ‘বাংলাধারা’র সভাপতি মাহবুব ভূঁইয়া নাজাহর বাবার বরাত দিয়ে বলেন, গত ২ মে হাসপাতালে ভর্তি হন নাজাহ। ৩ মে তার স্বামী ডেভিডের সঙ্গে ফোনে কথা হয় নাজাহর বাবা জিতুর। ওই সময় গুরুতর অবস্থায় ইমোরি জোন্স ক্রিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার দৃশ্য দেখিয়েছেন ডেভিড। নাজাহর বাবার সঙ্গে তার স্বামীর যোগাযোগ ছিল ৯ মে পর্যন্ত। এর তিন দিন পর গত ১২ মে ডেভিড নাজাহর বাবাকে অবহিত জানায়, গত ১১ মে তাকে দাফন করা হয়েছে স্থানীয় মুসলিম গোরস্থানে। অথচ মৃত্যুর খবরটি জানায়নি ডেভিড। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদে বিচলিত বাবা শরণাপন্ন হন বাংলাদেশ কমিউনিটির।
এদিকে, নাজাহর এই অকাল মৃত্যুতে শোকাহত সাবেক সহপাঠীসহ স্থানীয় প্রবাসীরা। তাদের দাবি নাজাহর মৃত্যু রহস্যজনক। দ্রুত এ মৃত্যুর কারণ উদঘাটন এবং মরদেহ তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তরে আবেদন করেন।
সহপাঠীরা বলেন, নাজাহর মৃত্যু কিভাবে কেন হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে নাজাহর মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হলেও ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এ মৃত্যুর কারণ হিসেবে কী লেখা রয়েছে সেটি কেউই জানতে পারছেন না। কারণ, তার স্থানীয় অভিভাবক হচ্ছেন তার স্বামী। তবে কংগ্রেসম্যানের হস্তক্ষেপে হয়তো সব কিছু উদঘাটিত হবে বলে আশা করেন তারা।
উল্লেখ্য, ছাত্র ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর সাউদার্ন ইউটাহ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিলেন। পাবনার ফেরিঘাট পাড়ার সন্তান নাজাহর দাবা খেলার শখ ছিল। সেই সুবাদে অনলাইনে বন্ধুত্ব হয়েছিল ডেভিডের সাথে। এরপরই বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।