পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়া শহরে সব থেকে বড় বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অফ ফিলাডেলফিয়া। সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। পরিশ্রমী পেশাজীবীদের এ সংগঠনটি বর্তমানে আমেরিকায় অন্যতম একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। সংগঠনটির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫০০ জনের বেশি। বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অফ ফিলাডেলফিয়ার নিজস্ব একটি বাড়ি রয়েছে। প্রতি সদস্য মাসে ১০ ডলার করে চাঁদা দিয়ে থাকেন।সদস্যদের মাসিক চাঁদায় ব্যাংকে বর্তমানে সংরক্ষিত আছে ২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের কাছাকাছি।
বিটিএসপির সদস্য এবং কমিউনিটির প্রিয়ভাজন ফয়সল আহমেদ সোহেল গত বছর বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুকালীন অনুদানের একটি অংশের অর্থ মরহুমের মেয়ে সোমাইয়া এফ বেগম এবং ছেলে আদনান ইউ আহমেদের কাছে গত ২৮ জানুয়ারি হস্তান্তর অনুদানের বাকী অর্থ শীঘ্রই বাংলাদেশে মরহুমের পরিবারের কাছে পৌঁছানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অফ ফিলাডেলফিয়ার সংবিধান অনুযায়ী কোন সদস্যের মৃত্যু হলে সাথে সাথেই সংগঠনের তহবিল থেকে তিন হাজার ডলার এবং প্রত্যেকটি সক্রিয় সদস্যকে একশত ডলার করে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দেয়ার বিধান রয়েছে।
সংগঠনের ৪৩৩ জন সদস্যের প্রত্যেকেই একশত ডলার করে পরিশোধ করেছেন। সর্বমোট ৪৩,৩০০ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেলের পরিবারের নিকট যথাসময়ে হস্তান্তর করেছেন সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ। কোন সদস্যের বিপন্ন পরিস্থিতিতে বিটিএসপির প্রত্যেকটি সদস্যের মধ্যে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে দায়িত্ব এবং আগ্রহ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেলের দেশের বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে, অনেক বন্ধু ও আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেল সহ সর্বমোট ৭ জন বিটিএসপির সদস্য ইন্তেকাল করেছেন। এর পূর্বে মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন (চট্টগ্রাম), জামাজ্জল হোসেন(রংপুর), তোজাম্মেল হক(দিনাজপুর) এবং ডাঃ মো এ এইচ তালুকদারের (ঢাকা) মৃত্যুবরণ করেন। তাদের প্রত্যেকের পরিবারকেও মৃত্যুকালীন ৪২ থেকে ৪৩ হাজার ডলার প্রদান করা হয়েছিল।এছাড়াও বর্তমানে আরও দুইজন মরহুম মোঃ ওয়াসিম শাহরিয়র পল্লব (ভেড়ামারা) যিনি বাংলাদেশ বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (নড়াইল) যিনি দুর্বৃত্তের গুলিতে আপারডার্বী মদিনা মসজিদের পার্কিং লটে নিহত হন তাদের টাকাও সদস্যদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। সদস্যদের মৃত্যুর পর সংগঠনের এমন এগিয়ে আসা আমেরিকায় বাংলাদেশিদের কোন সামাজিক সংগঠনের জন্য মাইলফলক বলে অনেকেই উল্লেখ করছেন।