‘ভালো’র তৃতীয় বার্ষিক ইফতার-নৈশভোজ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৫

নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক সামাজিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশী আমেরিকান হিউম্যানেটেরিয়ান এইড লিডারশাপ আউটরিচ- “ভালো” পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে তৃতীয় বার্ষিক কমিউনিটি ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করে। ইফতার মাহফিল গত ২২ মার্চ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে লং আইল্যান্ড এর ফাইভ স্টার বাঙ্কোয়েট হলে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধিরা ছাড়াও সিটি কমিশনার, ডিপার্টমেন্ট অফ ইউথ এন্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, কুইন্স চেম্বার অফ কমার্স, সিটি মেয়রের অফিস ও তার প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শক্তিশালী এবং নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের সাথে সেতুবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে ভালো। বিশেষ করে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পোর্কন্নয়নে অবদান রাখতে ভালো প্রায়শ:ই এ ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকে। ইফতার ও নৈশভোজ অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। শাহারিয়ার নবীর পরিচালনায় পবিত্র ইমাম আহমেদ আলী উজিরের কণ্ঠে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের পর মাহফিল পূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট জুমানে উইলিয়ামস। তিনি কমিউনিটির শক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে কমিউনিটির শক্তিই সিটির শক্তি।
মাহফিলে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানি, সিটি কাউন্সিল মেম্বার নাতাশা উইলিয়ামস ও লিন্ডা লি, সিটির ডেপুটি কমিশনার ফর ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট এনড ইনোভেশনের দিলীপ চৌহান, মেয়রের অফিসে চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মীর বাশার, ডাইরেক্টর অফ এমসিসি/লিয়াজোঁ কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ইউনিট মোহাম্মদ বাহি, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের কমিউনিটি কোঅর্ডিনেটর রোকেয়া আখতার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ফর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপস জেসিকা ভিডেস-হার্নান্দেজ. সিটি ডিওয়াইসিডি’র সিনিয়র ডাইরেক্টর নূরুস সালাম, এনওয়াইপিডি’র ডেপুটি ডাইরেক্টর আবদুল্লাহ খন্দকার, এনওয়াইপিডি’র ডেপুটি ইন্সপেক্টর আদিল রানা, এনওয়াইপিডি’র পুলিশ কমিশনার, এনওয়াইসি ওথ কমিশনার আসিম রহমান। এছাড়া এনওয়াইপিডি, জেএমসি, ইউএসবিসিসিআইন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি, নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাব, বিওএনওয়াই, এওয়াইএস্এব, বাপা, ডিওয়াইডিসডি, বিপিএল, ডিএইচকেয়ার এর প্রনিধিরা ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।
ইফতারের পর মাগরিব নামাজে ইমামতি করেন ইমাম শামসি আলী। নামাজের পর বক্তব্য রাখেন ড. সুজি ইসমাইল। তিনি ইসলামে কমিউনিটি সেবার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। কাবা শরীফের গিলাফ, কাবা ও রাসুল সা. এর রওজা মোবারকের তালা-চাবি প্রদর্শন করা হয়। শাহারিয়ার নবী অতিথিদেরকে স্বাগত জানান এবং ভালো’র বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবার, বন্ধু ও কমিউনিটির মানুষের সাথে ইফতার আয়োজন ভালো’র কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে। তিনি বলেন, ইফতার আয়োজনের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধের ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হবে। বাংলাদেশী খাবার ও আনুষ্ঠানিকতা আমাদের মাঝে বিরাজমান বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দিলে সাধারণ মানুষের মাঝে খাবার ও স্বাস্থ্য রক্ষা সামগ্রী পৌছে দিতে রাস্তায় নামেন ভালো’র একদল তরুণ। করোনাকালে একদিনও ঘরে বসে থাকেনি তারা। “মানুষ মানুষের জন্য” এ শ্লোগান সামনে রেখে জীবনের মায়া পেছনে ফেলে রাস্তায় নেমে আসেন। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি ও কানেকটিকাট রাজ্যের অসহায় মানুষের কাছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য উপকরণ পিপিই প্রদান, ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। ডিএইচ কেয়ারের সহযোগিতায় বছর জুড়ে তারা খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী চালিয়ে যায় ভালো। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় সংগঠনটিকে। এজন্য একটি খাবারের ট্রাকও ক্রয় করা হয়। ভালো’র মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী অব্যাহত রাখা হয়েছে। নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন কমিউনিটির এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই অলাভজনক এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য। ভবিষ্যতে খাদ্য বিতরণ সহ বিভিন্ন ধরণের সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ নিতে সংগঠনটি আগ্রহী বলে জানান শাহারিয়ার রহমান। আর এ কাজে কমিউনিটির মানুষের সহযোগিতা পেলে তা আরো ব্যাপকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।