এলএলসির অধীনে অনেকেই রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি কেনেন। কারণ এলএলসির অধীনে কিনলে লায়াবিলিটি কম থাকে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি লায়াবল হয় না। ফলে কোনো সম্পত্তি যদি কখনো লোকসানের মুখে পড়ে এবং সেটি ব্যাংকক্রাপসি করে, তখন ব্যক্তির ওপর প্রভাব পড়বে না। এটি ওই এলএলসির ওপর বর্তাবে। তাই ব্যক্তিগত সম্পদ ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য এলএলসির অধীনে বাড়ি কিংবা সম্পদ কেনা ভালো। সেটি অবশ্যই রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত এলএলসি হতে হবে। আর যদি কারও এলএলসি না থাকে, তাহলে তিনি রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত এলএলসি ওপেন করে বাড়ি কিনতে পারেন। এ বিষয়ে সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, কোনো সম্পত্তি কেনার আগে বিভিন্ন বিষয় পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। কারণ সম্পত্তি কেনার চেয়েও বড় কথা হলো তিনি সেটির নিয়মিত মাসিক এলএলসির অধীনে কেনা রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি স্থানান্তরের নিয়ম
(৭০-এর পাতার পর)
মর্টগেজ, বার্ষিক ইন্স্যুরেন্স, করসহ সবকিছু ঠিকমতো দিতে পারছেন কি না এবং এগুলো দিয়ে তিনি বাড়িটি ধরে রাখতে পারছেন কি না। তাই বলা যায়, বাড়ি কেনার মানেই যে বাড়িটি লাভজনক, তা নয়। কারণ বাড়িতে নানা রকমের খরচ আছে। এসব খরচ এই বাড়ি থেকেই বহন করতে হয়। বাড়ি ভাড়া দিয়ে কিছু অর্থ আসে। যদি মর্টগেজসহ সব খরচ দেওয়ার পর কিছু উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে সেটাকে বলা যায় লাভজনক। কিন্তু সব সময় বাড়ি কেনা লাভজনক নাও হতে পারে। কারও বাড়ি যদি তার ইনভেস্টমেন্ট প্রপার্টি হয় এবং তিনি এই বাড়ি থেকে বছরে লোকসান দিয়ে থাকলে ট্যাক্স ফাইল করার সময় তিনি ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত- লোকসান দেখাতে পারবেন। লোকসান কম হলে কমই দেখাতে হবে। সে ক্ষেত্রে ২৫ হাজার দেখানো যাবে না।
সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, অনেক মানুষই প্রশ্ন করেন, তারা কি এলএলসির অধীনে রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি কিনতে পারবেন? তাদের উদ্দেশে বলছি, এলএলসি ব্যক্তিগত সম্পদ, যেমন গাড়ি, বাড়ি, সম্পত্তির শিরোনাম ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং একইসঙ্গে এসবের গোপনীয়তা রক্ষা করে। আপনি যদি আপনার নামে রিয়েল এস্টেট কিনে থাকেন, তাহলে আপনার ভাড়াটেরা আপনার তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারবে। তারা অবশ্যই আপনার অবস্থান, পেশা এবং থাকার জায়গা খুঁজে পেতে পারে। এভাবে ভাড়াটিয়ারা আপনার আর্থিক এবং আইনি শক্তির মূল্যায়ন করতে পারে। এই মূল্যবান তথ্য দ্বারা অনেকে আপনার দুর্বলতা টের পেতে পারে বা দুর্বলতার জায়গাগুলো খুঁজে বের করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে মামলার জালে ফেলে আপনাকে বিপদেও ফেলতে পারে।
তবে লোকজন চাইলেই করপোরেশন বা কোকা-কোলা বা অ্যাপলের মতো বিশাল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে না। সবকিছুরই একটি সুরক্ষিত কাঠামো আছে। এলএলসির মাধ্যমে আপনার তথ্যাদির গোপনীয়তা রক্ষা পায়। কাজেই সবকিছু বিবেচনা করে আপনি অবশ্যই এলএলসির অধীনে রিয়েল স্টেট সম্পত্তি কিনতে পারবেন। এতে আপনার সম্পদের গোপনীয়তা এবং ভিত্তি শক্ত হয়।
এলএলসির অধীনে কেনা রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি স্থানান্তরের নিয়ম প্রসঙ্গে জাকির বলেন, মালিকানা হস্তান্তর সত্ত্বেও আপনি বন্ধকি অর্থ প্রদানের জন্য দায়ী থাকবেন। আপনি যদি বন্ধকি বাধ্যবাধকতার আওতায় থাকেন, তবে আপনার ঋণদাতা আপনাকে আপনার সম্পত্তির শিরোনাম একটি এলএলসিতে স্থানান্তর করার অনুমতি দিতে পারে। এখানে মালিকানা শিরোনাম স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। মালিকানা শিরোনাম স্থানান্তর প্রক্রিয়া যেভাবে সম্পন্ন হয়
১. একটি এলএলসি চালু করুন।
২. একটি ট্যাক্স আইডি নম্বর সংগ্রহ করুন এবং এলএলসির (খখঈ) নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন।
৩.মূলত মালিকানা স্থানান্তরের (Quitclaim Deed) দলিল বর্ণনা করে যে আপনি সম্পত্তিটি এলএলসির মাধ্যমে স্থানান্তর করে যাচ্ছেন।
৪. আবার এই মালিকানা স্থানান্তরের দলিল যে সবকিছু পরিষ্কারভাবে সম্পন্ন করতে পারবে, সে রকমও নয়। এখানে আরও কিছু বিষয় আছে।
৫.ওয়ারেন্টি বা মালিকানা স্থানান্তরের দলিল ফর্ম পূরণ করুন। এখানে আপনি অনুদানকারী বা দাতা আর এলএলসি হচ্ছে গ্রহীতা।
৬. একজন অনুদানকারী হিসেবে আপনাকে এই দলিলে স্বাক্ষর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সাক্ষী বা নোটারির সামনে স্বাক্ষর করা লাগতে পারে। তবব স্টেটভেদে এই নিয়মের ভিন্নতা রয়েছে।
৭.দলিলটি রেকর্ড করুন, কারণ এটি সম্পত্তি হস্তান্তরের একটি সর্বজনীন রেকর্ড এবং এটি ভবিষ্যতে লাগবে।
৮. ভাড়া দেওয়া সম্পত্তির ক্ষেত্রে আপনাকে লিজ সংশোধন করতে হবে।
একাধিক রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির জন্য একই এলএলসি ব্যবহার করা যাবে কি না, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি সম্পত্তির জন্য একটি করে এলএলসি শুরু করুন। একটি পৃথক সীমিত দায়বদ্ধতাভিত্তিক কোম্পানির শুধু একটি সম্পত্তির মালিক হওয়া উচিত। তারপর এটি অবশ্যই অন্য কোনো ব্যবসায়িক কার্যকলাপে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, আমি পরামর্শ দেব কেউ বাড়ি কিনলে এলএলসির নামে কিনুন। এতে করে ব্যক্তিগত সম্পদ ও সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব। লোকসান হলে সেটি বাড়ি এবং ওই এলএলসির ওপর দিয়ে যাবে।