প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কোন পদ্ধতিতে ভোট নেওয়া যায়, সেই সিদ্ধান্ত নিতে কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কর্মশালায় বসেছে ইসি।
এ আয়োজনের উদ্বোধনী পর্বে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বিশেষজ্ঞদের আজকের কর্মশালা থেকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নির্ধারণ হবে আশা করি।
“যে পদ্ধতি আপনারা সাজেস্ট করবেন, সে অনুযায়ী আমরা উদ্যোগ নেব। এরপরই পদ্ধতি নিয়ে একটা আর্কিটেকচার দাঁড় করানো হবে।”
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) দিনব্যাপি এ আয়োজনে বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ অন্তত ৮০ জন অংশ নিচ্ছেন। আছেন চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব।
অন্তর্বর্তী সরকারের মতো নির্বাচন কমিশনও আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেন নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, “প্রবাসীদের অনেকেই দেখা করে তাদেরকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে বলেছেন। তবে আমরা যেটা দেখলাম, এটা খুব সহজ নয়।
“অনেক পর্যালোচনার পর আমরা তিনটি পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছি। পোস্টাল ভোটিং, যেটি আমাদের এখন আছে। অনলাইন ভোটিং এবং প্রক্সি ভোটিং নিয়েও আমরা কাজ করছি।”
সিইসি বলেন, “সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা, ভোটারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রবাসীদের বাস্তবতা বিবেচনায় আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “পোস্টাল ও অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি এখানে তেমন কার্যকর হবে না। প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতিই উপযোগী।।”
প্রক্সি ভোট হল, একজনের ভোট তার মনোনীত আরেকজন দেবেন। অর্থাৎ, প্রবাসী তার ভোটদানের ক্ষমতা আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করবেন কোনো একটি নির্বাচনের জন্য।
‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি এবং সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগীদের মতামত নেওয়া হচ্ছে কর্মশালায়।
কারিগরি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুতই প্রবাসীদের ভোটিং পদ্ধতি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছেন প্রধান সিইসি নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, “এ ওয়ার্কশপ থেকে একটি বা কোন কোন দেশে পাইলট প্রোগ্রাম করা যায়- সেই পরামর্শ আপনারা দিন। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে যে পদ্ধতিতেই আমরা আগাই না কেন, প্রথমে পাইলটিং করে স্বল্প পরিসরে করতে হবে, এরপর বড় পরিসরে যেতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল, মামুন অর রশীদ, মোস্তাফিজুর রহমান, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মনিরুল ইসলাম, এ বি এম আলিম আল ইসলাম, অনিন্দ্য ইকবাল, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-এমআইএসটি’র কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাহফুজুল করিম মজুমদার, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আবুল বাশার কর্মশালায় উপস্থিত রয়েছেন।
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিষয়ক রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, ইসির আইসিটি শাখা, মাঠ কর্মকর্তা, ইএনডিপি, বেসিস এবং বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন।