মামদানির বিজয়ে সমর্থকদের উল্লাস

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৬ জুন ২০২৫, ১৪:০২

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির ভূমিধ্বস বিজয়ে বাংলাদেশী আমেরিকান কমিউনিটিতে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস পরিলক্ষিত হয়েছে। গত ২৪ জুন সন্ধা ৯টায় ভোট গ্রহণ শেষে টেলিভিশনের পর্দায় মুহূর্তেই মামদানির বিজয়ের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকার রেস্টুরেন্ট, পার্টি হল এবং অফিসে সমবেত হতে থাকেন মামদানির সমর্থকগণ।
এর আগে বিগত দু’মাস ধরে যারা মামদানির সমর্থনে কাজ করছেন তারা একে একে সবাই ছুটে আসতে থাকেন। বিশেষ করে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস, ওজোন পার্ক সহ বিভিন্ন এলাকায় মামদানির সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসেন অনেক বাংলাদেশী ভোটার। তারা মামদানির বিজয়ে উল্লাসিত হয়ে শ্লোগান দেন।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার থেকে আফতাব মান্নানের নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়। পরে হিলসাইড এভিন্যুতে গিয়ে শেষ হয় মিছিলটি। অপরদিকে জ্যামাইকায় হিলসাইড এভিন্যুস্থ ডিএইচ কেয়ারের জ্যামাইকা সেন্টার মিলনায়তনে সমবেত হন মামদানির সমর্থকগণ। সেখানে টিভির বিশাল পর্দায় মামদানি ও অন্যান্য প্রার্থীর বিজয়ের সংবাদে উল্লাসিত ছিলেন তারা। জোহরান মামদানি ছাড়াও পাবলিক এডভোকেট পদে উইলিয়াম জুমানি ও ব্রুকলীনের কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোমী তরুণ শাহরিয়ার রহমান ও ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। তাদের নেতৃত্বে বিশাল একটি স্বেচ্ছাসেবী দল মামদানির প্রচারণায় কাজ করেন।
২৪ জুন রাতে তারা মামদানির মূল ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেন লং আইল্যান্ড সিটিতে। জ্যামাইকা সেন্টারে আনন্দানুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহরিয়ার রহমান, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, আখতার হোসেন টিপু, ডা. ওয়াজেদ খান, হাসানুজ্জামান হাসান, রেজাউল করিম, বেলাল চৌধুরী, করিম চৌধুরী, রাসেক মালিক, মনিরুল ইসলাম মঞ্জু ও আহসান হাবীবসহ আরও অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রে যত বাংলাদেশির রয়েছেন, এর সিংহভাগই নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন। বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভোট নির্বাচনে বড় ভূমিকা না রাখলে মুসলিম ভোট হিসাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশিরা চান এই শহরে একজন ‘ভালো’ মেয়র আসুক, যিনি অভিবাসী সমাজের স্বার্থকে বড় করে দেখবেন। বাংলাদেশী কমিউনিটির বড় একটি অংশ মামদানির সমর্থনে বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে জন সমর্থন সৃষ্টি করেন নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন তারা ব্যাপক জনসংযোগ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারা। জ্যামাইকা সেন্টারে উপস্থিত মামদানি সমর্থকদেরকে শাহারিয়ার রহমান ধন্যবাদ জানান।
গত ২৪ জুন নিউইয়র্ক সিটির মেয়রসহ বেশ কয়েকটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পাবলিক এডভোকেট, সিটি কম্পট্রোলার, কাউন্সিলম্যান এবং বিচারপতি পদে। কাউন্সিলম্যান পদে বাংলাদেশী আমেরিকান শাহানা হানিফ নির্বাচন করেন। সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটারদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিলো প্রচন্ড গরম।
তাপমাত্রা ছিলো প্রায় ১০০ ডিগ্রির উপরে। তারপারেও প্রার্থীদের সমর্থকরা সকাল ৬টা থেকে প্রায় রাত ৯টা পর্যন্ত তাদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যান। এবারের মেয়র নির্বাচনের ইতিহাস সৃষ্টিকারী প্রার্থী জোহরান মামদানি বাংলাদেশী, মুসলিম এবং ইমিগ্র্যান্ট কম্যুনিটির মন জয় করেছেন। বিশেষ করে তার প্রতিশ্রুতি এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা ভোটারদের দৃষ্টি কেড়েছে।