যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বসবাসরত এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন কোর্টের বহিষ্কারের নির্দেশ অমান্য করে দীর্ঘদিন বসবাসের অপরাধে ১ দশমিক ৮২০ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ২২ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করেছে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট।
তবে দেশটির প্রচলিত আইন অনুসারে অভিযুক্তের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার মঈন চৌধুরী।
তিনি জানান, ১৯৯৫ সালে ওই প্রবাসী আশ্রয়ের আবেদন করলেও তা নাকচ হয়। পরবর্তীতে তিনি আপিল করেছিলেন, কিন্তু ২০০৭ সালে সেই আপিলও খারিজ করে দেন অভিবাসন আদালতের বিচারক।
তারপর মার্কিন নাগরিক এক নারীকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে থাকার আবেদন করলেও তাতে সাফল্য আসেনি। বর্তমানে ওই ব্যক্তি স্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া এক সন্তানকে নিয়ে নিউ ইয়র্কেই বসবাস করছেন।
সম্প্রতি তার ঠিকানায় পাঠানো এক চিঠিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি জানায়, ১৯৫২ সালের সংশোধিত এক অভিবাসন আইনের আওতায় ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি মে পর্যন্ত সময়ের জন্য তাকে এ জরিমানা দিতে হবে।
অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, “এটা সিভিল প্যানাল্টি। আমরা আবেদনটি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন-বিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে আশার আলো ক্ষীণ।”
তিনি আরও বলেন, “যদি সম্ভব হয়, জরিমানা পরিশোধ করে বাংলাদেশে ফিরে গেলে প্রচলিত আইনে ১০ বছর পর আবার আবেদন করা যাবে, যেহেতু স্ত্রী ও সন্তানরা মার্কিন নাগরিক।”
তবে এত বিশাল অংকের জরিমানা পরিশোধ করা ওই ব্যক্তির পক্ষে ‘সম্ভব নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন ভিসায় এসে যারা সরকারি সাহায্য নেন, তাদের স্পন্সরদের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানার বিধান থাকলেও তা এতদিন বাস্তবায়িত হয়নি। এবার হয়তো সেই বিধিও কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ১ লাখ ৫৮ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯ হাজার রয়েছেন ডিটেনশন সেন্টারে, বাকিদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সরকারি এই অভিযান অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যেই একটি স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যার আওতায় অবৈধভাবে বসবাসরত ব্যক্তিদের ফ্রি টিকেট ও ১ হাজার ডলার করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ইস্যুতে এমন পদক্ষেপে বাংলাদেশিসহ নানা দেশের অভিবাসীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তার মুখে।