কানাডার একাংশ দখলের চেষ্টা, ২ সেনাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৪:২১


কানাডার কুইবেক প্রদেশে চারজন পুরুষ, যাদের মধ্যে দুইজন কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় সদস্য, ‘চরমপন্থি মতাদর্শপ্রসূত সহিংস ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ও অভিযুক্ত হয়েছেন। এমনটি জানিয়েছে দেশটির পুলিশ বাহিনী রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন, যাদের বয়স বিশের কোঠায়, সরকারবিরোধী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গঠনের পরিকল্পনা করছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল ‘জোরপূর্বক কুইবেক সিটি অঞ্চলের একাংশ দখল করা। খবর সিএনএনের। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এই লক্ষ্যে তারা সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণ, গুলি চালানো, ঘাঁটি স্থাপন, বেঁচে থাকার কৌশল ও নেভিগেশন অনুশীলন চালিয়েছিল। তারা একটি স্কাউটিং অভিযানও পরিচালনা করে। এই কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, কিছু নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র, উচ্চ-ধারণক্ষম ম্যাগাজিন ও সামরিক কৌশলগত সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়।’
এই তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর চতুর্থ ব্যক্তি, যিনি ত্রিশের কোঠার শুরুতে, তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। চারজনকেই মঙ্গলবার (১০ জুলাই) কুইবেক সিটিতে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে সিএনএন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কুইবেক সিটির কাছে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১৬টি বিস্ফোরক যন্ত্র, ৮৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট উপকরণ, প্রায় ১১ হাজার রাউন্ড গুলি, ১৩০টি ম্যাগাজিন, নাইট ভিশন গগলসের চার জোড়া এবং সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
পুলিশের মুখপাত্র কর্পোরাল এরিক গাসে সিএনএনকে জানান, তদন্ত শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চে। অভিযুক্তরা একটি ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্র প্রচার এবং মিলিশিয়ার সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। এই ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা কুইবেক ও অন্টারিওতে সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণের বিজ্ঞাপনও দিত। তবে গাসে জানাননি, অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট মতাদর্শ কী ছিল বা ঠিক কোথাকার জমি তারা দখল করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে তাদের ধরতে পেরেছি, এটা সৌভাগ্যের বিষয়।’ আরসিএমপি জানায়নি অভিযুক্ত চারজনের মধ্যে কে বা কারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। তবে কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা দুইজন সক্রিয় সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘কানাডার সশস্ত্র বাহিনী এই অভিযোগগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে।’
কানাডার সামরিক বাহিনীতে চরমপন্থার অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দীর্ঘদিনের। ২০২২ সালের একটি সরকারি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সশস্ত্র বাহিনী ‘চরমপন্থি গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ থেকে মুক্ত নয়।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চরমপন্থি গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে রয়েছে বলে যে সন্দেহ, তা নৈতিক, সামাজিক ও কার্যকরীভাবে অত্যন্ত জরুরি একটি ইস্যু।”