ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবৈধ এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করে বাংলাদেশ। অবিলম্বে ফিলিস্তিন থেকে সব ধরনের বাহিনী প্রত্যাহার ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে চলমান শুনানিতে বাংলাদেশ নিজের এই অবস্থান জানায়। নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ আদালতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। ৫০টিরও বেশি দেশ এবং অন্তত তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই আদালতের শুনানিতে অংশ নেবে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে তাদের মত দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হামিদুল্লাহ বাংলাদেশের অবস্থান জানাতে গিয়ে বলেন, ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবৈধ বলে বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। এ বিষয়ে একটি অ্যাডভাইজরি মতামত দেওয়া হলে তা অবৈধ দখলদারিত্ব শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হবে।
ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবসানের কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশের বক্তব্যে ইসরায়েল, অন্যান্য দেশ এবং জাতিসংঘের জন্য করণীয় আইনি পদক্ষেপের কথাও বলা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের জনগণের নিজেদের শাসন করার ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করা এবং দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে তাদের বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে সব ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণেরও আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনে তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মতে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৯ হাজার ৯২ জন নিহত এবং প্রায় ৭০ হাজার জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের দাবি, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ জন নিহত হন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা বর্তমান ইতিহাসে অন্যতম লজ্জাজনক বিপর্যয়। হাজার হাজার নিরীহ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের হত্যা করা, তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করা, খাদ্য ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য, জন্মলগ্ন থেকে ফিলিস্তিন ও এর জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ বা যেকোনও আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ সবসময় সরব ভূমিকা পালন করে থাকে।