নির্বাচনের প্রায় দুই সপ্তাহ পর নানা নাটকীয়তা শেষে যখন জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে পিএমএল-এন ও পিপিপি তখন নির্বাচনের ফলাফলই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হলো ইমরান খানের দল। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে পিটিআই এ সংক্রান্ত একটি পিটিশন জমা দেয়।
পিটিশনে পিটিআই দাবি করেছে, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ১৮০টি আসনে জয়ী হয়েছে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা। কিন্তু কারসাজির মাধ্যমে ৯২টি আসনে তাদের জয়ী দেখানো হয়েছে। পিটিআই নেতাদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে ‘ভোট কারচুপি’ করা হয়েছে।
পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা শের আফজাল মারওয়াত শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, পিটিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নিয়োগকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন জমা দিয়েছিলেন আলী খান নামে অবসরপ্রাপ্ত এক পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা। আবেদনে আগের নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ৩০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আদেশ দেওয়ার জন্য আদালতকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নতুন সরকার গঠন বন্ধও রাখতে বলা হয়েছিল আবেদনে। বুধবার সেই আবেদনের ওপর শুনানির দিনও নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। কিন্তু সেদিন আবেদনকারী আদালতে উপস্থিত না থাকায় সেই পিটিশন বাতিল করে দেন সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে আলী খানকে ৫ লাখ রুপি জরিমানাও করেন সর্বোচ্চ আদালত।
সরকার গঠনে মতৈক্যে: অবশেষে সরকার গঠনে মতৈক্যে পৌঁছেছে দুই রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পদ দুটির মনোনয়ন তারা ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এতে পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন পিপিপি নেতা আসিফ আলি জারদারি; শাহবাজ শরিফ হবেন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী।
আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। শুক্রবার দেশটির পাঞ্জাবপ্রদেশে শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত এমপিরা। ইসলামাবাদে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এ সমঝোতার ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে দোদুল্যমানতার অবসান হলো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে জোট সরকার গঠনের দিকে হাঁটছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। নির্বাচনে ৫৪ আসন পেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কিছু শর্তে জোট সরকার গঠন করতে চায় ৭৫টি আসনে বিজয়ী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল–এন) সঙ্গে। পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট গঠন চূড়ান্ত হলে সরকার গঠন না করে বিরোধী দল হিসেবে থাকতে হতে পারে আসন সংখ্যায় প্রথম অবস্থানে থাকা ইমরানের দল পিটিআইকে। এক্ষেত্রে ক্ষমতার মসনদ অধরাই থাকছে ইমরানের।