আল-মাওয়াসি শিবিরে হত্যাযজ্ঞ

মার্কিন এমকে-৮৪ বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:০৬

ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণে আল-মাওয়াসি এলাকার একটি ‘মানবিক নিরাপদ অঞ্চলে’ যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করেছে। একটি মানবাধিকার সংস্থা, এই হামলায় ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করছে। এই হামলার ফলে অনেকেই মাটির নিচে চাপা পড়েছে বলে জানিয়েছে জেনেভাভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।
ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর জানায়, মধ্যরাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান তিনটি মার্কিন তৈরি ৯০০ কেজি ওজনের এমকে-৮৪ বোমা ফেলে। এমন সময় এসব বোমা ফেলা হয় যখন বেসামরিক লোকেরা ঘুমাচ্ছিল। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ১৪ হাজারের বেশি এমকে-৮৪ বোমা সরবরাহ করেছে।
মঙ্গলবার ভোরে খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। ইসরায়েল এই এলাকাকে বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ‘মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আঘাতে এলাকাটিতে প্রায় ৯ মিটার গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
এই মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, যাদের নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য তথাকথিত ‘নিরাপদ’ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাতের আঁধারে এসব অঞ্চলে হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতার প্রমাণ মেলে।
সংস্থাটি বলেছে, এই বোমাগুলো গভীর গর্ত তৈরি করেছে, যেখানে প্রায় ২০টি তাঁবু মাটির নিচে চাপা পড়েছে। পুরো পরিবারসহ অনেক তাঁবু বালির নিচে চাপা পড়েছে।
ইউরো-মেড জানায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ইসরায়েলকে আরও অপরাধ করতে উৎসাহিত করছে। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, যুদ্ধের ইতিহাসে এমন নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডের প্রতি অবহেলা লজ্জাজনক এবং এটি ইসরায়েলকে আরও অপরাধ চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও এই অপরাধের অংশীদার, কারণ তারা ইসরায়েলি বাহিনীকে এমন অস্ত্র সরবরাহ করছে যা বেসামরিকদের হত্যার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
গত মাসেও গাজা সিটির আল-তাবাঈন স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয় ও কয়েক ডজন আহত হয়। ওই স্কুলে ছয় হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েল গাজার বেসামরিক স্থাপনা যেমন স্কুল, হাসপাতাল ও উপাসনালয় লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী, এমন বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।