যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন) বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা করছেন। এরই অংশ হিসেবে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নতুন বিভাগে স্থানান্তর করা হবে।
শুক্রবার এক বক্তব্যে ট্রাম্প জানান, ছাত্রঋণের দায়িত্ব ছোট ব্যবসা প্রশাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষা ও পুষ্টি সংক্রান্ত কার্যক্রম স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগে স্থানান্তর করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, "ছাত্রঋণ ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করতে এটি ছোট ব্যবসা প্রশাসনের অধীনে দেওয়া হবে। এই সংস্থার প্রধান কেলি লোফলার এটি পরিচালনা করবেন।
বর্তমানে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফেডারেল স্টুডেন্ট এইড অফিস ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলারের ছাত্রঋণ পরিচালনা করে, যা ৪৩ মিলিয়ন আমেরিকানের ঋণের পরিমাণ। তবে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগে সাধারণত ছোট ব্যবসার ঋণ প্রদান ও ব্যবস্থাপনা করে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে এর বাজেট ও কর্মীসংখ্যা হ্রাস করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচার্সের প্রেসিডেন্ট র্যান্ডি ওয়েইনগার্টেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "আদালতে দেখা হবে।" বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ১৯৬৫ সালের হায়ার এডুকেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী শিক্ষামন্ত্রীর অধীনে থাকা ছাত্রঋণ ব্যবস্থাপনাকে অন্য বিভাগে স্থানান্তর করা আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
ট্রাম্প আরও জানান, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও পুষ্টি সংক্রান্ত কার্যক্রম স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের অধীনে নেওয়া হবে। রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের নেতৃত্বে এই বিভাগ বিষয়গুলো পরিচালনা করবে।
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, "পেল গ্রান্ট, টাইটেল ১ এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য তহবিল সংরক্ষিত থাকবে। এগুলো অন্য বিভাগে সঠিকভাবে পুনর্বণ্টন করা হবে।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রদবদল শিক্ষার্থীদের জন্য আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ঋণ পরিষেবা পেতে সমস্যায় পড়তে পারেন, কারণ তাদের এ ধরনের ঋণ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই।
শিক্ষা নীতি বিশেষজ্ঞ জেমস কভাল বলেন, "এই পরিবর্তনের ফলে ঋণ পরিশোধে জটিলতা তৈরি হবে, ফলে বহু শিক্ষার্থী ডিফল্টের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।"
ছাত্রঋণ ও বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচি স্থানান্তরের এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস ও আদালতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষাবিদরা এই পরিবর্তনের বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বিগ্ন। পরবর্তী সময়ে এই পরিকল্পনা কীভাবে কার্যকর হবে এবং আইনি চ্যালেঞ্জগুলো কেমন হয়, তা সময়ই বলে দেবে।