তাইওয়ানের শিক্ষার্থী ইউ-হুসুয়ান লিন। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন তাঁর। সুযোগও পেয়েছেন। হার্ভার্ডে ভর্তির চিঠি লিনের হাতে এসেছে। আসছে সেপ্টেম্বরে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎই সবকিছু যেন অনিশ্চয়তার মেঘে ঢেকে গেছে।
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে লিনের এই অনিশ্চয়তা। তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বসে রয়টার্সকে সেই গল্প বলেন লিন। তিনি বলেন, ‘স্বপ্ন পূরণে আমার যাত্রা যতটা কঠিন হবে ভেবেছিলাম, তার চেয়েও বেশি কঠিন হয়েছে। এখনো বেশ কিছু অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।’
লিন আরও বলেন, ‘বছরের অর্ধেকজুড়ে যেসব পরিবর্তন এসেছে, ভেবেছিলাম তা মেনে নেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু এ নিয়ম বিশেষভাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাই মনে হচ্ছে, এতে আমি সত্যি ভুক্তভোগী হয়েছি। এ জন্য আমি কিছু্টা উদ্বিগ্ন।’
এই উদ্যোগকে কেমব্রিজসহ যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান প্রচারের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এ নিয়ম মার্কিন সংবিধান ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’।
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধে ট্রাম্পের পরিকল্পনা সাময়িক স্থগিত করলেন আদালত
যদিও গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরের একটি আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের এ আদেশ আটকে দিয়েছেন। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার অপেক্ষায় থাকা লিনের মন থেকে অনিশ্চয়তার মেঘ কাটছে না।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সামনে এখন দুটি বিকল্প। হার্ভার্ডে পড়াশোনার স্বপ্ন আপাতত স্থগিত রাখা। কিংবা যুক্তরাজ্য বা ইউরোপের অন্য কোনো দেশে মাস্টার্সের জন্য আবেদন করা, এমনটাই বলেন লিন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্তের কারণে তাইওয়ানের ৫২ জন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী হতে পারেন। তাইওয়ানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে দ্বীপটির সরকারি কেন্দ্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
তাইওয়ানের আরেক শিক্ষার্থী ভিন্স এ বছর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জনস্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করার পরিকল্পনা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই বেশ বিচলিত বোধ করছি। তাইওয়ানের একটি ছোট শহর থেকে হার্ভার্ড অবধি আসাটা আমার জন্য একটি স্বপ্নের মতো।’