যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য নিউ হ্যাম্পশায়ারের ইস্টার্ন ইক্যুইন এনসেফালাইটিস (ইইই) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এটি মশাবাহিত অত্যন্ত বিরল একটি রোগ। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। এতে আক্রান্ত হলে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৩০ শতাংশ।
নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস (ডিএইচএইচএস) এক বিবৃতিতে বলেছে, হ্যাম্পস্টেড শহরের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সম্প্রতি স্নায়ুতন্ত্রের গুরুতর অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে তিনি মারা যান।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিউ হ্যাম্পশায়ারে মানুষের মধ্যে ইইই সংক্রমণের সবশেষ ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালে। তখন ডিএইচএইচএস তিনজনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত করেছিল, যার মধ্যে দুজনই মারা যান।
ইইই’র ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি সম্পর্কে সম্প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের কর্মকর্তারা। তার মধ্যেই আরেকটি অঙ্গরাজ্যে নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর সামনে এলো।
নিউ ইংল্যান্ড কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে এ বছরের প্রথম ইইই’র মানব সংক্রমণের কথা জানিয়েছিল ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্য। সেখানে ৮০ বছর বয়সোর্ধ্ব এক ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হন।
সেসময় কর্মকর্তারা জনসাধারণকে ঘরের বাইরে না যেতে, উন্মুক্ত পার্কগুলো এড়িয়ে চলতে এবং মশা নিয়ন্ত্রণে স্প্রে ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার (সিডিসি) তথ্যমতে, ইস্টার্ন ইক্যুইন এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, খিঁচুনি, আচরণগত পরিবর্তন এবং তন্দ্রার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে।
এটি গুরুতর স্নায়বিক রোগও সৃষ্টি করতে পারে, যেমন- মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং মেরুদণ্ডের চারপাশে ঝিল্লি, যা এনসেফালাইটিস ও মেনিনজাইটিস নামে পরিচিত।
১৫ বছরের কম এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ইইই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়। আক্রান্তদের প্রায় ৩০ শতাংশই মারা যান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাও বাকি জীবন এর শারীরিক বা মানসিক প্রভাব ভোগ করেন।
এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা বা চিকিৎসা নেই।