\মালয়েশিয়ার অভিবাসন দপ্তরের (জেআইএম) উদ্যোগে চালু হওয়া প্রত্যাবাসন কর্মসূচিতে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। চলতি বছরের ১ মার্চ শুরু হওয়া এই কর্মসূচি ৩১ ডিসেম্বর শেষ হতে চলেছে। কর্মসূচির আওতায় অভিবাসীরা স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন, যা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া থেকে মুক্তি দিচ্ছে।
কুয়ালালামপুরের ইমিগ্রেশন অফিসে অভিবাসীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে, বিশেষত ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ থেকে আসা কর্মীদের। ভোর ৭টা থেকেই অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন যেন দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।
২৬ বছর বয়সী নেপালের নাগরিক যোগেন্দ্র বলেন, আমার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে সহজেই দেশে ফেরার সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। অবৈধভাবে থাকার জন্য শাস্তি পাওয়ার ঝুঁকির চেয়ে এই প্রক্রিয়া অনেক সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ।
ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক সুজি (৪৫), যিনি চার বছর ধরে মালয়েশিয়ার কারখানায় কাজ করেছেন, বলেন, ‘আমি জাকার্তায় ফেরার জন্য প্রস্তুত। মালয়েশিয়া আমাকে জীবিকা উপার্জনের সুযোগ দিয়েছে, যা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করব।’
জেআইএম তেরেঙ্গানুর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি দ্রুততার সঙ্গে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে, যেখানে ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই অভিবাসীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারছেন।
কুয়ালালামপুর জেআইএম অফিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৩৪৯ জন অভিবাসী এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫৬১ জন পুরুষ, ৬ হাজার ৪০২ জন নারী এবং ১ হাজার ৩৮৬ জন শিশু রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণকারী ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং নেপাল থেকে। প্রায় ১৩.১২ মিলিয়ন রিঙ্গিত জরিমানা এই কর্মসূচিতে অনেকে অংশ নিয়েছে।
অভিবাসীদের জন্য সরকার তিনটি নির্দিষ্ট শর্তে জরিমানা আরোপ করেছে: ১. অবৈধভাবে প্রবেশ বা অবস্থানের জন্য ৫০০ রিঙ্গিত। ২. ওভারস্টে থাকার জন্য ৫০০ রিঙ্গিত। ৩. ভিসার শর্ত ভঙ্গের জন্য ৩০০ রিঙ্গিত।
তাদের অবশ্যই বৈধ ভ্রমণ নথি এবং দেশে ফেরার টিকিট জমা দিতে হবে। যাদের নথি নেই, তাদের নিজ নিজ দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনের পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সাউপি বলেন, আমরা প্রতিদিন ৩৫০ জনেরও বেশি আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছি। যারা কুয়ালালামপুরে সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের নিকটস্থ জেআইএম অফিসে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করছি।