সন্দ্বীপে বিএনপির নির্বাচনি দৌড়ে যুক্তরাষ্টে্র দুই প্রবাসী

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৪২

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম- ৩) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দুই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। দলীয় মনোনয়ন হতে ইতোমধ্যেই তারা জোর তদবির শুরু করেছেন। ধর্ণা দিচ্ছেন ঢাকার কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও। পাশাপাশি সরব হচ্ছেন বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠানেও। 
এই দুই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী হলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন।
মোস্তফা কামাল পাশা বাবুলের বাড়ি সন্দ্বীপের বাউরিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে। তিনি দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও উপদেষ্টা ছিলেন। 
উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের নেতাকর্মীদের সুসময় ও দুঃসময়ে সাহায্য সহযোগিতা করে পাশে থাকেন মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল। তিনি করোনা মহামারীর সময় একক অর্থায়নে দলমত নির্বিশেষে সন্দ্বীপের দুঃস্থ মানুষের মাঝে ৩২ লাখ টাকার ঔষধ, খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। 
তৃণমূলে ব্যাপক জনপ্রিয় এই নেতা বিভিন্ন সময় দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আহত বা নিহত হয়েছেন, এমন ৫২ টি পরিবারকে ১০ বছর ধরে প্রতি ঈদে ৫ হাজার করে ঈদ উপহার প্রদান করে আসছেন। যাদের খবর অন্য নেতাকর্মীরা তেমন একটা নেন না।
তিনি বছরে কয়েকবার সন্দ্বীপ এসে দলীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে থাকেন। ১৬ বছর ধরে চলা আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী সব আন্দোলন সংগ্রামে তিনি অর্থ সহায়তা করে পাশে ছিলেন।
সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের মাঝে ৪ লাখ টাকার খাবার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামে সন্দ্বীপের যেসব নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের জামিন করতে তিনি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টনের বাড়িও বাউরিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে।
তিনি বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের সদস্য সচিব ছিলেন। জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলার আসামি। সর্বশেষ গত ১২ ডিসেম্বর এই মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৯ বছর পর দেশে ফেরা বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সন্দ্বীপে তেমন সক্রিয় না থাকলেও সরকার পতনের পর সন্দ্বীপে গিয়ে হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে তিনি সভা সমাবেশ করেছেন। অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও দলীয় অনুষ্ঠানেও।
এর আগে তিনি ঈদের ছুটি সন্দ্বীপগামী শিক্ষার্থী ও অসহায়দের বিনামূল্যে সন্দ্বীপ যাত্রার একটি উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা করেছেন। এছাড়া তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলার জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসীদেে নিয়ে ‘বহির্বিশ্ব সন্দ্বীপ জাতীয়তাবাদী ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন। এটির মাধ্যমে ফান্ড সংগ্রহ তিনি বিএনপির নিপীড়িত, নির্যাতিত নেতাকর্মীদের প্রায় ৮০/৯০ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় দলীয় নেতাকর্মীদের নিজ উদ্যোগেও আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন বলেও জানা যায়।