ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে ‘ই-পাসপোর্ট’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ব্রাসিলিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব নাসরিন জাহান এবং ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক কর্নেল মো. আনোয়ার-উল-আলম, এসজিপি। এছাড়া ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ঢাকা হতে আসমা প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্রাসিলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মো. আনোয়ার-উল-আলম ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম ও প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং ‘ই-পাসপোর্ট’ আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপস্থিত বাংলাদেশীদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। উদ্বোধনের আগে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল টিম দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেন।
নাসরিন জাহান সঠিক তথ্যসমৃদ্ধ পাসপোর্ট ইস্যুর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহযোগিতা চান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাদিয়া ফয়জুননেসা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং গৌরবান্বিত মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্রজনতার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধনের এই দিনটিকে দক্ষিণ আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীদের জন্য একটি আনন্দের ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হওয়ার ফলে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলি, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া ও ভেনেজুয়েলায় বসবাসরত কয়েক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রক্রিয়াসমূহ সহজতর ও নিরাপদ হবে।
সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এবং বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের সাথে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী হবে; যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।’
তিনি বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাসিলিয়ায় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এই সেবা কার্যক্রম চালু করার ফলে এখন থেকে দক্ষিণ আমেরিকার উল্লেখিত দেশগুলোতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা দূতাবাসে এসে ই-পাসপোর্ট সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া, দূতাবাস বিভিন্ন শহরে কনসুলার পরিষেবার মাধ্যমে ই-পাসপোর্টর আবেদন নিতে পারবে। আবেদনকারীরা ৫ বছর বা ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আবেদনকারীদের ই-পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট স্লিপ হস্তান্তর করেন।
রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কন্স্যুলার শাখায় নতুন স্থাপিত ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট সিস্টেম পরিদর্শন করেন।