নিউইয়র্কে আফ্রিকানদের অনুষ্ঠানে লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন কাজী হাসান

নিউইয়র্ক সংবাদদাতা
  ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন গোপালগঞ্জের কৃতিসন্তান নিউইয়র্ক কারেকশন অফিসার কাজী হাসান।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর কুইন্সের ওয়ান ওয়ার্ল্ড ফেয়ার ম্যারিনা বেঙ্কুইট হলে এসোসিয়েশন অব আফ্রিকান ন্যাশনস ইন কারেকশন (এএএনসি) এর আয়োজিত বার্ষিক নৈশভোজ ও আ্যাওয়ার্ড নাইট অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ এর সময় বাংলাদেশি কমিউনিটির সেবায় নের্তৃত্ব প্রদানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এএএনসি এর পক্ষ থেকে তার হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ডেপুটি ওয়ারেন মারাজ। সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি এডেনিয়া এডেসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক কারেকশন বিভাগের কমিশনার লুইস এ মলিনা। এছাড়াও সিটির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাসহ পাঁচ শতাধিক কারেকশন অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ কারেকশন সোসাইটি (বিসিএস) এর উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য কারেকশন অফিসার ইকবাল সাইফুদ্দীন জানান, অফিসার হাসান গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার তারাইল গ্রামের কাজী ইদ্রিস হোসেন ও আরজু বেগমের জৈষ্ঠ্য পুত্র। গত ৬ বছর ধরে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে নিউইয়র্ক কারেকশন অফিসার হিসেবে কাজ করে আসছেন এবং এর আগে নিউইয়র্ক সিটি ডিপামের্ন্ট অফ হোমলেস সার্ভিসেস (ডিএইচএস) এ পুলিশ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে কারেকশন বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি অফিসারদের নিয়ে বাংলাদেশ কারেকশন সোসাইটি (বিসিএস) গড়ে তোলেন। বর্তমানে সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে দুই শতাধিক সদস্যের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
সংগঠনটির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রচার করা, সদস্যদের বিভাগের নীতি এবং নিয়ম সম্পর্কে অবগত করা এবং আরও বাংলাদেশি অফিসার নিয়োগে বিভিন্ন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সহায়তা করার জন্য নিবেদিত এবং বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সাথে সক্রিয়। কোভিড ১৯ এর প্রাদুর্ভাবের সময় তার নেতৃত্বে বিভিন্ন জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং নির্ভীকতার জন্য সর্বমহলে প্রশংসিত হন। সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস অফিসার কাজী হাসান এবং তার সংগঠনকে শহরের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি প্রশংসাপত্র প্রদান করেন। এদিকে তার জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে কারেকশন বিভাগের বর্তমান কমিশনার লুইস মলিনা তাকে নিয়ে টুইট করেন যা বিভাগে কর্মরত অফিসারদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। এক ছেলে, এক মেয়েসহ সস্ত্রীক ব্রংঙ্কসে বসবাস করেন তিনি।
অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে কাজী হাসান তার বক্তব্যে বলেন, কোভিডের সময় আমার নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশি অফিসার ও তাদের পরিবার এবং কমিউনিটিকে সেবা প্রদানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য এ বিরল সম্মাননা পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। কমিউনিটিকে সেবা করা শুধু দায়িত্ব না এটি একটি অনন্য সুযোগ যা আমাকে সহানুভূতি, ধৈর্য্য শক্তি এবং সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব বিকাশে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। আমি মেয়র এরিক এডামসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য।
নিউইয়র্ক সিটি কারেকশন কমিশনার লুইস মলিনা কারেকশন বিভাগে আরও বাংলাদেশি নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিভাগে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব প্রদান করে কারেকশন বিভাগে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন বলে কাজী হাসান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। 
বক্তব্য শেষে তিনি এসোসিয়েশন অব আফ্রিকান ন্যাশনস ইন কারেকশন ইনকের (এএএনসি) সভাপতি ও অন্যান্য কার্যনির্বাহী সদস্যদের এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান।