পরিবারের ভাগ্য বদলাতে বছর পাঁচেক আগে সৌদি আরবে যান আল আমিন (৩৬)। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জিজানের একটি কারখানার মসজিদে ইমামতি করতেন। পাশাপাশি গাড়ি ভাড়ায় নিয়ে মানুষের বাড়িতে খাবার সরবরাহ শুরু করেন। সেখানেই শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ গেছে আল আমিনের।
আল আমিনের নিহতের ফুফাতো ভাই শিক্ষক কামাল হোসেন সরকার বলেন, সৌদি আরবের ইয়েমেন সীমান্তবর্তী শহর জিজানের একটি কোম্পানির মসজিদে ইমামতি করতেন আল আমিন। সংসারের দায়দেনা মেটাতে ইমামতির পাশাপাশি মানুষে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতেন। শুক্রবার মসজিদে তারাবির নামাজ শেষে গাড়ি নিয়ে একই কাজ করতে বের হন আল আমিন। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁর মরদেহ রাস্তায় পাশে পড়ে থাকতে দেখে লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সৌদি আরবে অবস্থানরত আল আমিনের ভগ্নিপতি নাজমুল ইসলাম সেখানে গিয়ে পরিচয় শনাক্ত করেন। তিনিই পরে পরিবারকে ফোনে বিষয়টি জানান।
কামাল হোসেনের ভাষ্য, আল আমিনের চোখ-বুকসহ শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের ধারণা। তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে– সে বিষয়ে কোনো কিছুই আঁচ করতে পারছেন না।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) আড়াইহাজার জোনের ফিল্ড অফিসার আমিনুল হক সমকালকে বলেন, আল আমিনের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য তাদের কর্মীদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এসব নিয়ে আল আমিনের মরদেহ দেশে আনা, বিদেশে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির বিষয়ে কাজ শুরু করবেন। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এ বিষয়ে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিতে।
আল আমিন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের উলুকান্দি গ্রামের লাক মিয়ার ছেলে। তাঁর মৃত্যুর সংবাদে উলুকান্দি গ্রামে চলছে শোকের মাতম। শান্ত ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত আল আমিনকে গুলি করে হত্যার খবরে বিস্মিত প্রতিবেশী ও স্বজনরা।