জমকালো আয়োজন যেমন বরের বাড়িতে, তেমন কনের বাড়িতেও। মৃত বাবার স্বপ্নপূরণে বর আসেন হেলিকপ্টার নিয়ে।পরে পালকিতে চড়ে যান শ্বশুরবাড়িতে। সেখানে বর পক্ষকে স্বাগত জানাতে ছিল বাহারি আয়োজন। এর পর স্বপ্নপূরণ করেই সাংবাদিকদের কাছে বাবার জন্য অঝোরে কাঁদলেন সৌদিপ্রবাসী ছেলে।
বর মোকসেদুল ইসলাম মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মাদবরচরের পদ্মা সেতুর পুনঃবাসন কেন্দ্রের মরহুম ফজলুল হকের চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তিনি প্রায় ২০ বছর আগে সৌদিতে পাড়ি জমান।
জানা যায়, ফজলুল হকের খুব ইচ্ছা ছিল মোকসেদুল ইসলামের বিয়েতে হেলিকপ্টারে করে ছেলেকে বরযাত্রী পাঠাবেন ও বৌ আনবেন। ২০১১ সালে বাবার মৃত্যুর পর মা প্রায়শই ছেলে মোকসেদুলকে বিষয়টি মনে করিয়ে দিতেন। সম্প্রতি একই উপজেলার সন্ন্যাসীরচরের মোল্লাকান্দির ব্যবসায়ী হানিফ মুন্সীর একমাত্র মেয়ে মুসফিকা সুলতানার সঙ্গে মোকসেদুলের বিয়ে ঠিক হয়।
গতকাল শুক্রবার বাবার স্বপ্নপূরণে বর মোকসেদুল হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। চড়েন পালকিতে। পরে বৌ নিয়ে ফেরেনও একইভাবে। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বর মোকসেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর ধরে প্রবাসে বসবাস করছি। আমার বাবা ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বাবা মারা যাওয়ার অল্প কিছুদিন আগে কথায় কথায় বলেছিলেন, আমাকে তিনি হেলিকপ্টারে করে শ্বশুরবাড়ি পাঠাবেন এবং নববধূকে হেলিকপ্টারে বাড়ি আনবেন। বাবার মৃত্যুর পর আমার মা সবসময় বাবার শেষ ইচ্ছা আমাকে স্বরণ করিয়ে দিতেন। আজ আমি আমার বাবার স্বপ্নপূরণের জন্যই হেলিকপ্টারে চড়ে শ্বশুরবাড়ি এসে নববধূকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে প্রত্যন্ত গ্রামে হেলিকপ্টার দেখতে অনেকেই ভিড় জমান বিয়েবাড়িতে। স্থানীয় তারেক হোসেন বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানটি খুব আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। বর তার বাবার স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে শ্বশুরবাড়ি এসে নববধূকে নিয়ে আবার হেলিকপ্টারে চড়েই বাড়ি ফেরেন।
স্থানীয় আলিম শেখ বলেন, ‘বাবার স্বপ্ পূরণের জন্য ছেলে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করছে এটা জেনে খুবই ভালো লাগল। এমন ছেলে কয়জনের ভাগ্যে জোটে। আমি এই নব দম্পত্তির জন্য দোয়া করি।’