র্যাব এবং তার নিজের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে তিন বছরের প্রচেষ্টা এবং এক শ মিলিয়ন ডলারে প্রকল্প রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, চারটি আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে এসব করা হয়েছে। তবে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে দোষী করতে চান না বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান।
আইজিপি বেনজীর আহমেদ নিউইয়র্কে আসতে পারবেন কিনা; কয়েকদিন আগেও এমন সংশয়ের কথা বলা হচ্ছিল।
সেখানে তিনি কেবল জাতিসংঘের পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে অংশই নেননি, বরং যোগ দিয়েছেন তার সম্মানে দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এর অঙ্গ সংগঠনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দীর্ঘ সময় ধরে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান। তিনি নিজেকে গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর দিক দিয়ে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এরপরও তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যদিও এসব অভিযোগ একেবারেই সত্য নয়। যে সময়ের প্রেক্ষাপটে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তখন তিনি র্যাবের দায়িত্বেই ছিলেন না বলে জানান।
আইজিপি বলেন, 'অভিযোগ করা হচ্ছে ২০০৯ সাল থেকে নাকি ৬০০ লোক গুম হয়েছে। কিন্তু ঐ সময়ে আমি র্যাবের ডিজি ছিলাম না'। তিনি ২০১৫ সালের র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘এসব লোক যে গুম হয়ে গেল বলা হচ্ছে, কিন্তু তাদের তালিকা কোথায়?’
নিষেধাজ্ঞা দিলেও তিনি এসব কিছুর জন্য আমেরিকার সরকারকে দায়ী করতে চান না। তিনি বলেন, 'এসব কিছুর পেছনে রয়েছে তিন বছরের পরিশ্রম। ' একটি ওয়েবসাইটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সেখানে গিয়ে দেখবেন চারটি লবিস্ট ফার্মকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ফার্মকে ২৫ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়া হয়েছে। এটি ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট। অথচ যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তার সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। '
তিনি আরো বলেন, 'আমি আমেরিকান সরকারকে দোষ দেই না। কারণ আমেরিকান কোনো নাগরিক কিংবা আমেরিকার সরকার তো এই লবিস্টদের নিয়োগ করে নাই। বরং ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের পিপল টু পিপল যোগাযোগ রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে। সহযোগিতামূলক অনেক কার্যক্রম চালু রয়েছে। '
তিনি অভিযোগ করেন, 'দেশের বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। যা মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে যেতে হবে। '
বিভিন্ন দেশ থেকে আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ২২টি চ্যানেল থেকে “তথ্য সন্ত্রাস” চালানো হতো অভিযোগ করে আইজিপি বলেন, “এখন কয়েকটি বেড়েছে। তাদের কথা কেউ শুনবেন না। তাদের বয়কট করুন। ”
এদিকে আইজিপি নিউইয়র্কে আসার পর থেকে তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, এই সংবর্ধনাস্থলেও।