ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউএসএ’র উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপিত হয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উডসাইডের গুলশান টেরেসে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়। দুই পর্বে সম্পন্ন হয় অনুষ্ঠানটি। প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও র্যালি। দ্বিতীয় পর্বে কেক কাটা, আলোচনা ও বিভিন্ন প্রকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এ দিন দুপুরের পর থেকেই জড়ো হতে থাকেন নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসে। টি-শার্ট বিতরণের পর শুরু হয় র্যালি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ৩৭-৭৩ এভিনিউতে অবস্থিত বাংলাদেশ প্লাজার সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়। এটি পরিচালনা করেন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা বাঁশি, ঢোল-তবলা বাজিয়ে, গান গেয়ে র্যালিকে আরও আনন্দঘন করে তোলেন।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এনথেম গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তার আগে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউএসএ’র আহ্বায়ক মো. মাসুদুল ইসলাম।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে কেক কাটার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়পর্ব। মহুয়া মৌরি ও মুহাম্মদ শফীর উপস্থাপনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনভেনর মো. মাসুদুল ইসলাম, নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মুনিরুল ইসলাম, ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল ইসলাম, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজিং অফিসার লোকমান হোসাইন। গ্রাজুয়েট ক্লাবের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. রোকানুজ্জামান ও মহসিন উদ্দীন মোল্যা।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। তারা কেউ ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতিচারণ করেছেন। এ ছাড়া কবিতা আবৃত্তি, সংগীত পরিবেশনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে মেতে উঠেন ঢাকা ব্শ্বিবিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউএসএ’র সদস্যরা।
ড. মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাবের এই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছি কনসাল জেনারেল হিসেবে নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে। যখন থেকে এই অনুষ্ঠানের খবর পেয়েছি, তখন থেকেই এই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় ছিলাম। আমার মনের আঙিনায় এখন ভাসছে সেই টিএসসি, কলাভবন, নীলক্ষেত, মলচত্বর, কার্জন হল, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি আর রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের প্রতিটি স্মৃতি।’
গ্রাজুয়েট ক্লাবের আহ্বায়ক মাসুদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে সত্য সুন্দর ও উজ্জ্বল আগামীর স্বপ্ন। জীবনের অনিবার্য ডাকে আমরা হয়তো ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে এসেছি। তবে আমরা জানি, বিশ্ববিদ্যালয় কখনো প্রাক্তন হয় না। এই গ্রাজুয়েট ক্লাবের মাধ্যমে আমরা আবার সবাইকে এক সুঁতোয় গাঁথবো।’
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে ছিল, র্যাফেল ড্র টিকিট বিতরণ, তথ্যচিত্র প্রদর্শন, বক্তৃতা, স্মৃতিচারণ, দলীয় ও একক সংগীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি, ফ্যাশন শো, নৃত্য পরিবেশনা, ক্যাম্পাসভিত্তিক নাটিকা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। রাতের খাবারের পর র্যাফেল ড্র’র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। সবশেষে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় রাত ১১টায়।