ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটির ইভেন্টে বুধবার বন্দুক হামলায় নিহত হন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও কনজারভেটিভ নেতা চার্লি কার্ক।
৩৩ ঘণ্টার অভিযানে নিজের পরিবারের সহায়তায় গ্রেপ্তার হন হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত টাইলার রবিনসন।
এফবিআইয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ফক্স নিউজ ডিজিটালকে জানান, কারাগারে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন রবিনসন।
ইউটাহের সেন্ট জর্জে বসবাসকারী রবিনসন রুপান্তরকামী এক ব্যক্তির সাথে একটি অ্যাপার্টমেন্টে ভাগাভাগি করে থাকতেন। কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তিকে একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এফবিআই নিশ্চিত করেছে যে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
একজন এফবিআই কর্মকর্তা জানান, রবিনসনের কথিত প্রেমিকা দাবি করেন তার কোনও ধারণা ছিল না যে রবিনসন কার্ককে হত্যার করার পরিকল্পনা করছেন।
ফক্স নিউজ জানায়, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখনও কোনও অভিযোগ আনা হয়নি। তবে আর কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি, ডিজিটাল প্রমাণ জব্দ
এজেন্টরা এই দম্পতির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কম্পিউটার এবং অন্যান্য প্রমাণও জব্দ করেছে, যা বিশ্লেষণের জন্য কোয়ান্টিকোতে এফবিআই সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। রবিনসনের সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হতে পারে কিনা তা জানাতে ব্যুরো অস্বীকৃতি জানালেও, একজন মুখপাত্র তদন্তের মাত্রার ওপর জোর দিয়েছেন।
এফবিআই মুখপাত্র ফক্স নিউজকে বলেন, এফবিআই রেকর্ড সংখ্যক সূত্র তদন্ত করছে। প্রতিটি সংযোগ, প্রতিটি গোষ্ঠী, প্রতিটি লিঙ্ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তারা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে থাকুক না কেন, বিচারের আওতায় আনা হবে।
রবিনসনের অ্যাপার্টমেন্ট দক্ষিণ ইউটাহের একই কমিউনিটিতে, যেখানে তার বাবা-মা থাকেন। এই স্থানটি ওরেমের ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটি থেকে প্রায় চার ঘন্টা দূরে। বুধবার ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসেই ৩১ বছর বয়সী চার্লি কার্ককে জনসমক্ষে ভাষণ দেওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়। কর্তৃপক্ষের ধারণা, রবিনসন প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি ভবনের ছাদ থেকে এক রাউন্ড গুলি ছোড়েন।
দক্ষিণ ইউটাহ শহর, টাইলার রবিনসন যেখানে বেড়ে ওঠেন সেটি রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত। প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা তাকে সংযত ও বুদ্ধিমান তরুণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি একটি রিপাবলিকান পরিবারের সন্তান এবং ভিডিও গেম, কমিক বই ও সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন।
ওয়াশিংটন কাউন্টি ক্লার্কের মতে, রবিনসন ইউটাহ ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত, কিন্তু তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন এবং কখনও কোনও নির্বাচনে ভোট দেননি।
রবিনসন সেন্ট জর্জের ডিক্সি টেকনিক্যাল কলেজের একটি বৈদ্যুতিক শিক্ষানবিশ প্রোগ্রামের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
রবিনসনের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কিছু দূরে বসবাসকারী ১১ বছর বয়সী অলিভার হোল্ট জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে তিনি কমপ্লেক্সে থাকা প্রতিবেশীদের সাথে ছোটখাটো কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। এসময় রবিনসনের আচরণ তার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগে। সে বারবার তার অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে দেখছিল। অলিভারের মতে, সে কিছুটা নার্ভাস এবং ভীত আচরণ করছিল।
একজন বৃত্তিপ্রাপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শিক্ষানবিশ ইলেকট্রিশিয়ান এবং পরবর্তীতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিতে পরিণত হওয়ার বিষয়টি কারো কাছেই স্পষ্ট নয়।
তথ্যসূত্র:টিবিএন২৪