উল্লেখযোগ্য শারীরিক বা মানসিক হেনস্তার শিকার হওয়ার পর তদন্ত বা বিচারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তাকারী ব্যক্তিরা অ্যামেরিকায় এক ধরনের নন-ইমিগ্র্যান্ট স্ট্যাটাস পান ইউ ভিসার মাধ্যমে। এ ভিসা কারও কারও ক্ষেত্রে হতে পারে অ্যামেরিকায় থাকার শেষ অবলম্বন।
ভিসাটি নিয়ে টিবিএন অ্যানালাইসিসের উপস্থাপক রানা আহমেদের একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অ্যাটর্নি মাহফুজুর রহমান।
টিবিএন: ইউ ভিসা নিয়ে আমরা প্রথমে কথা বলি। এই ভিসার মাধ্যমে কোন ধরনের অপরাধের শিকার হলে একজন ব্যক্তি ইউ ভিসার যোগ্য হবেন বা এই ভিসাটা আসলে কী?
মাহফুজুর রহমান: প্রথমে রানা ভাই আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনি খুব চমৎকারভাবে তিনটা যেই ইমিগ্রেশন বেনিফিট, খুব চমৎকারভাবে দর্শকদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ডেফিনেশনটি খুব চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছেন। এটা আমার মনে হয় দর্শকদের বুঝতে খুবই সুবিধা হবে।
এখন আসি যে আলোচনায় এই তিনটা আপনার ইমিগ্রেশন বেনিফিট কেন আমরা আজকে আলোচনার মধ্যে আনলাম। আপনি যেটা বলেছেন যে, যাদের ইমিগ্রেশন সমস্যা আছে এবং যাদের কিনা অলরেডি সবকিছু ডান হয়ে গিয়েছে। ফর এক্সাম্পল কোনো একজন নন সিটিজেন তার ডিপোর্টেশন অর্ডার হয়ে গিয়েছে অথবা তার কোনো কিছু রিলিফ নেই। এখানে অ্যাসাইলাম করার মতো তার কোনো আপনার বিষয়বস্তু নেই অথবা তার অ্যাসাইলাম করা ছিল; সে ডিপোর্টেশনের মধ্যে চলে গেছে। তারপরে এখন দেখা গেল যে, হঠাৎ করে কোনো কারণে যাওয়া হলো না অ্যামেরিকা থেকে, কিন্তু কাজ করছে অথবা ঘর থেকে বের হয়েছে এবং কোনো দুর্ভাগ্যবশত একটা অপরাধের শিকার হলো, ভিকটিম হলো।
তখন সে কিন্তু এই ইউ ভিসা যেটা আপনি বললেন যে, ইউ ভিসার জন্য সে যোগ্যতা অর্জন করবে। তো ইউ ভিসার জন্য যেকোনো ক্রাইম নয়; এটা আপনার সিরিয়াস ক্রাইম হতে হয়। এখানে আপনার ইউএসসিআইএসে এটার লিস্ট দেওয়া আছে। ফর এগজ্যাম্পল, যেটা আপনার মারামারি কথা বললেন, সেটি অবভিয়াসলি ফেলোনি (গুরুতর অপরাধ) হতে হবে অথবা রিলেটেড ক্রাইম হতে হবে।
তারপর হচ্ছে আপনার মার্ডার, ম্যানস্লটার (নরহত্যা), অ্যাবডাকশন (অপহরণ)। তারপর কিডন্যাপিং (অপহরণ), ডমিস্টিক ভায়োলেন্স (পারিবারিক সহিংসতা), এ রকম অনেকগুলো লিস্ট দেওয়া আছে।
এই ক্রাইমগুলোর যদি কেউ ভিকটিম হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু সে ইউ ভিসার জন্য কোয়ালিফাই করবে। আর মনে রাখতে হবে যে, ইউ ভিসার অন্যতম শর্ত হচ্ছে যে, ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিকে পূর্ণ সহায়তা দিতে হবে ওই ক্রিমিনালকে ধরার ব্যাপারে অথবা তার সাজা প্রদান করার ব্যাপারে। যদি সেই সহযোগিতা না করে থাকে, তাহলে কিন্তু সে ইউ ভিসার জন্য কোয়ালিফাই করবে না।
আর হচ্ছে তারপরে ইউ ভিসা আবেদন করতে গেলে ফার্স্ট যে স্টেপটি নিতে হয়, সেটি হচ্ছে লইয়ারের মাধ্যমে পুলিশ অথবা যে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি যে কেসটি হ্যান্ডেল করছে যদি কেসটি কোর্টে চলে যায়, সেখানে একটা সার্টিফিকেশনের জন্য আবেদন করতে হবে। একটা ইউএসসিআইএসে ফরম আছে। সেই সার্টিফিকেশনটি যদি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট অথবা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস সার্টিফাই করে দেয় যে না, সে কোয়ালিফায়েড ভিকটিম এ ক্রাইমের।
বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে বেশির ভাগ যে আমাদের ক্লায়েন্টরা কোয়ালিফাই করে, সেটি হচ্ছে রবারি (ডাকাতি)। রবারি কিন্তু আপনার একটা ফেলোনিয়াস আপনার ক্রাইম সেটা। কারণ হচ্ছে রবারিতে যদি শুধু বন্দুক ধরে অথবা কোনো হার্টও না করে, স্টিল কিন্তু ইউ ভিসার জন্য কোয়ালিফাই করে। কারণটা হচ্ছে যখনই আপনার ফোর্স ইউজ করা হবে এবং তার কাছ থেকে কোনো কিছু নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা হচ্ছে রবারির আন্ডারে পড়বে এবং এটা অটোম্যাটিক ফেলোনিতে আপনার ট্রিট করা হবে এবং সে ইউ ভিসার জন্য কোয়ালিফাই হয়ে থাকে। আমি যেটা বললাম বেশ কয়েকটা ক্রাইমের কথা। আরও অন্যান্য ক্রাইমগুলো আছে, যেগুলোর ভিকটিম হলে সে কিন্তু ইউ ভিসার জন্য কোয়ালিফাই হতে পারে।
তো এই জিনিসটা কিন্তু আমাদের কমিউনিটির মধ্যে এবং অনেক নন সিটিজেনই কিন্তু জানে না এবং বিশেষ করে যদি দেখা যায় যে, ফুল ডিপোর্টেশন হয়ে গেছে দেশে। আর কোনো অপশন নাই, স্টিল কিন্তু ইউ ভিসার মাধ্যমে কিন্তু তার স্ট্যাটাস গেইন করতে পারে। আবার ডিপোর্টেশন (বিতাড়ন) রিমুভ করতে পারে। আল্টিমেটলি গ্রিন কার্ড এবং সিটিজেনশিপ পেতে পারে ইউ ভিসায়।
আর এই ইউ ভিসার ক্ষেত্রে শুধু যে ভিকটিম অব ক্রাইম, সে নয়; তার স্পাউজ, তার চিলড্রেন আন্ডার টোয়েন্টিওয়ান, আনম্যারিড চিলড্রেন, তারাও কিন্তু সেইম বেনিফিট পাবে। বাংলাদেশে থাকলেও পাবে। এখানেও থাকলেও পাবে।
আবার আরেকটি মজার যে ক্রাইটেরিয়া ইউ ভিসায়, সেটি হচ্ছে যদি কেউ ১৮ বছরের নিচে যদি কোনো ভিকটিম হয়ে থাকে, ফর এগজ্যাম্পল, কোন মাইনর যদি সেক্সুয়াল এবিউজের ভিকটিম হয়ে থাকে অথবা সে যদি কোনো রবারি ভিকটিম হয়ে থাকে, অ্যাসল্ট ভিকটিম হয়ে থাকে, যেটা ফেলোনিয়াস অ্যাসল্ট, সে যদি তখন ক্লেইম করে, তখন কিন্তু সে আবার তার প্যারেন্টস এবং তার ভাই বোনদেরকেও আনতে পারবে; অ্যানম্যারিড আন্ডার টোয়েন্টিওয়ান সিবলিং। তাদের জন্য কিন্তু স্পন্সর করতে পারে।
ইউ ভিসার আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে কোনো টাইমফ্রেম নাই। কিছুদিন আগে একটা এগজ্যাম্পল বলি। আমাদের এক অফিসে আসছে ১১ ইয়ারস বিফোর সে কিন্তু একটা রবারির ভিকটিম হয়েছিল।
আমাদের কাছে যখন ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্সির জন্য আসছিল কথা প্রসঙ্গে সেই জিনিসটা চলে আসল। তখন বললাম যে, ইউ এলিজিবল ফর ইউ ভিসা এবং আমরা সত্যি সত্যি সেটা নিউ জার্সি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসে আমরা চিঠি লেখছি সেটা ক্রাইমের যে রেফারেল ছিল। ওরা কিন্তু সাথে সাথে সার্টিফাই করে পাঠিয়ে দিয়েছে।
তো তার কিন্তু কোনো ইমিগ্রেশনের আর কোনো স্কোপ নাই। কোনো দিকে যাওয়ার কোনো অবস্থা নাই। এখন কিন্তু সে ইউ ভিসার মাধ্যমে তার স্ট্যাটাস গেইন করতে পারবে নিশ্চিতভাবে।
তথ্যসূত্র:টিবিএন২৪