বোস্টনের আদালতে বেইনের নির্বাচনী ফলাফল বাতিল

৯০ দিনে পুনঃনির্বাচন

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০১

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনে বাংলাদেশি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড (বেইন)-এর গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে আদালত। ২০২৩ সালের বেইন-এর নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করা হয়। বোস্টন বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এই প্রথম ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন ম্যাসাচুসেটসের একটি আদালত। গত শুক্তবার (১২ জুলাই) লরেন্স উচ্চতর আদালতের সহযোগী বিচারক ক্রিস্টেন বাক্সটন এ আদেশ দেন।একই সঙ্গে পুর্বের নির্বাচনী ফলাফল বাতিল পুর্বক বিবাদীপক্ষকে মামলার সকল খরচ বহন এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য বেইন-এর কার্যনির্বাহী পরিষদকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
মামলা চলাকালীন সময়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের মোট ১০ জন আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। বাদী পক্ষের স্বাক্ষীরা হলেন-গোলাম আজম, আশিকুর রহমান, আবুল খান, শেখ বাহাউদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন ও মামলার বাদী মাহবুব খোদা, বিবাদী পক্ষের স্বাক্ষীরা হলেন-আসামী সালাউদ্দিন খান, আব্দুল্লাহ মাহমুদ, আসামী পারভিন চৌধুরী ও জলিল চৌধুরী। আদালতের ঘোষিত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ। তারা বলেন, আমরা সত্যের পথে ছিলাম এবং আছি তাই আমাদের বিজয় হয়েছে। তাদেরকে সমর্থন প্রদানে বোস্টন বাংলাদেশি কমিউনিটির সকলকেই তারা আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।
আদালত ও বেইন-এর বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২০২৩ সালের ১০ ও ১১ নভেম্বর দু’দিন ব্যাপী বোস্টনে বাংলাদেশি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড (বেইন)-এর দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ১ মাস আগে থেকেই প্রচারণা ও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ছিলেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ। তাদের এ জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত অপর প্যানেল তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদে সাথে যোগসাজস করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ‘ডাকযোগে ভোট প্রদান’ প্রক্রিয়াসহ আগাম ভোটের বন্দোবস্ত করেন। এ সংবাদ পেয়ে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ ডাকযোগে ভোট প্রদানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেন। বিষয়টি বারবার জানানো সত্বেও খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের কোন অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত। ফলে নিরুপায় হয়ে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ আদালতের শরণাপন্ন হন। আইনজীবির দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ নভেম্বর ম্যাসাচুসেটসের দেওয়ানী কার্যবিধি বিধির ৬৫ ধারায়  লরেন্স সুপরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউ ‘ডাকযোগে ভোট প্রদান’ প্রক্রিয়া বন্ধের আদেশ প্রদান করেন।
নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত অপর প্যানেল তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদের সাথে গোপন ষড়যন্ত্র করে ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের এক সপ্তাহ আগে তানভির-তাজ-শান্তা পরিষদকে সাথে নিয়ে ওবার্ন, নিউ বেডফোর্ড ও ডরচেষ্টার শহরে গিয়ে রাতের অন্ধকারে আগাম ভোট গ্রহণ করেন। সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই খোদা উক্ত ভোট বতিলের আবেদন জানালে বিজ্ঞ আদালত গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ‘ডাকযোগে ভোট' গ্রহণ এবং রাতের অন্ধকারে আগাম ভোট বাতিল ঘোষণা করেন।  
লরেন্স সুপরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউ-এর পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনায় অগ্রিম ভোট গণনা বাতিল হলে সভাপতি পদে মাহবুব-ই খোদা ৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে অপর প্রার্থী তানভির মুরাদকে পরাজিত করবেন। বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের প্রতিনিধিদের অসম্মতিতে জোর পূর্বক অগ্রিম ভোট (এক সপ্তাহ আগে রাতের অন্ধকারে গ্রহন করা) ৬৯৪টি ভোট যুক্ত করে তানভির মুরাদসহ তার প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান সালাউদ্দিন খান সৈকত। তার পাতানো ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)।
আদালতের পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাত্র ১৫ ভোটের ব্যবধান নির্বাচন কমিশনের পছন্দের প্যানেলকে তাৎক্ষণিক ঘোষণা দিলে পাতানো ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে একটি প্যানেলের সম্মতি ছাড়াই এক তরফাভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, বেইনের কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদের জন্য এবারে দু’টি প্যানেলে ৩০ প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হয়। এবারের নির্বাচনে স্বজনপ্রীতি ও ভোট কারচুপির লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ‘ডাকযোগে ভোট গ্রহণের’ ঘোষনা দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন একটি প্যানেলের প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর আপত্তি জানায়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে নিজের মনগড়া সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে থেকেই নির্বাচন কমিশনার সালাউদ্দিন খান সৈকত আদালতের পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনা মতাবেক চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আদালতের পরবর্তী নির্দেশনার জন্য। আদালতের পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাত্র ১৫ ভোটের ব্যবধান নির্বাচন কমিশনের পছন্দের প্যানেলকে তাৎক্ষণিক ঘোষণা দিলে পাতানো ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদ।
লরেন্স সুপরিয়র কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক জেনিস ডব্লিউ. হাউ-এর পুর্ব ঘোষিত নির্দেশনায় অগ্রিম ভোট গণনা বাতিল হলে সভাপতি পদে মাহবুব-ই খোদা ৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে অপর প্রার্থী তানভির মুরাদকে পরাজিত করবে। বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের প্রতিনিধিদের অসম্মতিতে জোর পূর্বক অগ্রিম ভোট (এক সপ্তাহ আগে রাতের অন্ধকারে গ্রহন করা) ৬৯৪টি ভোট যুক্ত করে তানভির মুরাদসহ তার প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান সালাউদ্দিন খান সৈকত। তার পাতানো ও পূর্ব পরিকল্পিত ফলাফল ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন খোকা-সাজু-রাজিব পরিষদের পক্ষে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব-ই-খোদা (খোকা)।