বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি’র প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে হামলায় এনআরবিসি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী আহত হয়েছেন। ২২ জুলাই সোমবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আয়োজন করে এই প্রতিবাদ সমাবেশ। সোমবার রাতে ব্রঙ্কসের স্টার্লিং-বাংলাবাজার এলাকার এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের সামনে আয়োজিত সমাবেশটি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমর্থকরা পন্ড করে দেয়। এক পর্যায়ে সমাবেশস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা এনআরবিসি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলীকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়।
আহত ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী জানান, কতিপয় সন্ত্রাসী আকস্মিক সমাবেশস্থলে হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করে। এতে তিনি মাথা ও ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা পান। পরে পুলিশে কল করা হলে এম্বুলেন্স এসে তাকে ব্রঙ্কসের জ্যাকোবি হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তিনি বাসায় ফিরে যান।
ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী আরও জানান, তিনি হামলার বিষয়টি পুলিশে রিপোর্ট করেছেন। পুলিশ হামলার স্থলের ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামীদের খঁজছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আয়োজকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা শেখ জামাল হোসেনের পরিচালনায় এ প্রেতিবাদ সমাবেশে এনআরবি কমার্সিয়াল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী ছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল চৌধুরী, আমেরিকান-বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ইনক’র সভাপতি আব্দুস শহীদ, বঙ্গমাতা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমদ সোহাগ, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্র স্বোচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ইকবাল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিউইয়র্ক স্টেট কমান্ড ইউএসএ’র উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী বশির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম আবু নাছির, আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত আলী, কফিল চৌধুরী, অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ, রেজা আবদুল্লাহ স্বপন, মো. নুর উদ্দিন, জামাল আহমেদ, মঈজুর লস্কর জুয়েল, শাহীন কামালী, শ্যামল কান্তি চন্দ, মিয়া মোহাম্মদ দাউদ, সাদেকুর রহমান, আল মামুন সরকার, স্পন মাস্টার, কাজী রবি-উজ-জামান, আবদুর রব হাওলাদার সহ আওয়ামীলীগ সহ সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সমাবেশের অদূরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমর্থনে বিপুল সংখ্যক লোক জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সমাবেশকারীদের ওপড় চড়াও হয়। এমন অবস্থায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে সমাবেশের কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এর পরপরই হামলা ঘটনাটি ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এলাকাবাসী জানান, এঘটনার পর ব্রঙ্কসের স্টার্লিং-বাংলাবাজার এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে। বিষয়টি যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংগর্ষে রূপ নিতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত তাদের পুরনো আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নেমেছে। এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ জায়গা হিসেবে ব্যবহার করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। সারাদেশে বিএনপি জামায়াতের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররাই তান্ডব চালাচ্ছে। এর সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই। বক্তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত হামলা করে সরকার হটানোর ষড়যন্ত্র করছে পলাতক দন্ডিত বিএনপি নেতা তারেক রহমান।