বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও বর্বরোচিত হামলা এবং সহিসংসতায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং নিরীহ মানুষের প্রাণহানী এবং মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। বুধবার ‘সেইভ বাংলাদেশ’ এর ব্যানোরে বেলা তিনটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই কর্মসূচী চলে। বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশগ্রহনকারীরা মাথায় জাতীয় পতাকা আর লাল কাপড় পড়ে তাদের দাবী-দাওয়া সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে গগণ বিদারী শ্লোগান তুলেন। এসময় তারা শেখ হাসিনা সরকারেরও পদত্যাগ দাবী করেন। উল্লেখ্য, একই দাবীতে ইতিপূর্বে নিউইয়র্ক সিটির ম্যাহাটানের ঐতিহাসিক টাইম স্কায়ার, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সামনে এবং জাতিসংঘের সামনেও হয়েছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। খবর : ইউএনএ’র।
জাতিসংঘ ভবনের সামনে আয়োজিত এই বিক্ষাভ সমাবেশে বাংলাদেশী-আমেরিকান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সহ নিউইর্কের সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ নেন। তারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। সমাবেশে সেভ বাংলাদেশ-এর নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সমন্বয়কারী ডা. মাসুদুর রহমান, প্রেসিডেন্ট জাহিদ খান, সমন্বয়কারী সৈয়দ আল আমীন রাসেল সহ অন্যান্যের মধ্যে ডা. তুহিন আনোয়ার, ইমরান আনসারী, রওশন হক, রাব্বী সৈয়দ, কনা কামরুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই সমাবেশে সাথে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন সঙ্গীত শিল্পী বিপ্লব।
বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচির এক পর্যায়ে জাতিসংঘ ভবনে মহাসচিব বরাবর ‘সেভ বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জাহিদ খান ও অন্যতম সমন্বয়কারী সৈয়দ আল আমীন রাসেল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে কোটা আন্দোলনের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি এই আন্দোলনে ছয় বছরের শিশু ও ফিফথ গ্রেডের শিক্ষার্থী ছাড়াও ১১ বছরের বালক সহ ২৬৬ জন নিহত (এ পর্যন্ত) এবং বাংলাদেশে চরম মানবাধিকার লংঘনের কথা তুলে ধরা হয়। স্মারিকলিপিতে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতিংঘের দায়িত্বশীল ভূমিকা কামনা, সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকান্ডের বিচার এবং নোবেল পুরষ্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের একটি অবাধ নির্বাচনের দাবী সহ ৫ দফা দাবীর কথা উল্লেখ করা হয়।
এদিকে জাতিসংঘের সামনের বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচীর পর বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেষ্টুরেন্ট মিলনায়তনে সেভ বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জাতিসংঘের কর্মসূচী সফল করায় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং আগামীতে আরো কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানানো হয়।