ছাত্র- জনতার গন অভ্যুত্থানের গৌরবময় বিজয়কে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা চলছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে চরম মাত্রায় অত্যাচার ও নৈরাজ্য চলছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিষ্টান, আহমদিয়া সম্প্রদায় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষের বাড়িঘরে হামলা করছে, অগ্নিসংযোগ ও শারীরিক নির্যাতনে লিপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে উগ্র ডানপন্থী জঙ্গি চরমপন্থীসহ স্বার্থান্বেষী মহল যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সহাবস্থানকে সব সময় বিরোধিতা করে এসেছে, তারাই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন প্রসিকিউটরের উপর নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদানে এবং চলমান সকল ধরনের সহিংসতা বন্ধে কোন ধরনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ইতিহাসের অমূল্য চিহ্নগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির ম্যুরালসহ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে বিনষ্ট করে এই গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে ম্লান করে ফেলেছে। মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের অসম্মান করার সকল অপতৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এর উসকানি/ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করে যোগ্য শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। এই অভ্যুত্থানের মূল আকাঙ্ক্ষা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ। কিন্তু যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো এই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে, দীর্ঘ স্বৈরশাসনের পৃষ্ঠে তারা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। এই অবস্থায় অর্ন্তবর্তীকালীন জাতীয় সরকার যাতে গণঅভ্যুত্থানের এই আকাঙ্ক্ষার দিকে অগ্রসর হয়,সেক্ষেত্রে সকলের ভূমিকা রাখতে হবে।