জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি) পরিচালিত জামিয়া কোরআনিয়া একাডেমি থেকে এবার কোরআনে হাফিজ হয়েছেন ৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের সনদ প্রদান উপলক্ষে গত ১০ আগস্ট শনিবার আয়োজন করা হয় গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানের। জেএমসির যুগ্ম সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব পরিচালনা করেন । পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন হাফিজী ছাত্র নাজমুস সাকিব, স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন জেএমসির প্রেসিডেন্ট ডা. মাহমুদুর রহমান তুহিন।
দ্বিতীয় পর্বের পরিচালনা করেন জামিয়া কোরআনিয়া একাডেমির শিক্ষক হাফিজ আবু সুফিয়ান। কোরআন মুখস্থ করার অভিজ্ঞতার ওপর বক্তব্য রাখে হাফিজ শফি চৌধুরী। উল্লেখ্য, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার জেএমসি নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির বৃহত্তম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বহুমুখী এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম জামিয়া কুরানিয়া একাডেমি। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর প্রতিবছর এই একাডেমি থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কুরআনে হাফেজ হিসেবে ডিগ্রীপ্রাপ্ত হচ্ছেন। জেএমসি পরিচালিত জামিয়া কোরআনিয়া একাডেমি থেকে এ পর্যন্ত ১০৯ জন হাফিজ হিসেবে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছেন।
হাফিজী ছাত্রদের সেরা উপস্থিতির জন্য ছাত্রদের অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন জেএমসির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল হক ও এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার জুলকার হায়দার। বক্তব্য রাখেন জেএমসির পরিচালক ইমাম শামসি আলী। সদাচরণের সেরা ছাত্রদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করেন যুগ্ম সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এবং সাবেক কোষাধ্যক্ষ বাবুল মজুমদার। সেরা একাডেমিক ক্লাস পরীক্ষার জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন জেএমসির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জামিল চৌধুরি এবং এক্সিকিউটিভ মেম্বার প্রফেসর নাজমুল আহসান ও বখত চৌধুরী। কোরআনের গুরুত্বের ওপর বক্তব্য রাখেন গ্রাজুয়েশন লাভকারী হাফিজ সৈয়দ আকিফ এসফার। হাফিজ ক্লাস পরীক্ষার জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন জেএমসির শিক্ষকবৃন্দ হাফিজ মামুনুর রশীদ, হাফিজ জাহিদুল ইসলাম, মুফতি ওমর খান এবং জেএমসির বোর্ড অফ ট্রাস্টি সদস্য হাজি শামসুল ইসলাম।
অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য পেশ করেন শেখ আকিবুজ্জামান চৌধুরী। গ্রাজুয়েশন লাভকারী হাফিজদের মধ্যে সার্টিফিকেট প্রদান করেন জেএমসির প্রেসিডেন্ট ডা. মাহমুদুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট খাজা মিজান হাসান, আল মামুর স্কুলের চেয়ারম্যান ডা. মুহসিন পাটোয়ারী, বোর্ড অফ ট্রাস্টির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. হুমায়ুন আহমেদ, জেএমসির কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ এম রহমান লাবু এবং জেএমসির ভাইস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক। ধন্যবাদ প্রদান করেন বোর্ড অফ ট্রাস্টির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. হুমায়ুন আহমেদ এবং সমাপণী বক্তব্য প্রদান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জামিয়া কোরআনিয়া একাডেমির প্রিন্সিপাল হাফিজ মুজাহিদুল ইসলাম। বাদ মাগরেব অনুষ্ঠিত হয় নূতন হাফেজদের গ্রাজুয়েশন। বক্তাগন বলেন, কোরআনে হাফেজরা আমাদের সমাজের গর্ব।
হিফজ স্কূল থেকে বের হয়ে সিটির স্পোশালাইজ্্ড স্কুলগুলোতে ভর্তির জন্য প্রতিযোগিতা করছে এবং সেখানেও ভর্তির ক্ষেত্রে তারা এগিয়ে আছে । তারা বলেন, জেএমসি’র হিফজ স্কুল থেকে যারা হাফিজ হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ইতোমধ্যে নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং অনেক ইসলামী সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে ইসলামের দাওয়াত পৌছে দিচ্ছেন।
মাদ্রাসায় লেখাপড়া করলে শুধু মসজিদে ইমামতিই নয় এখন আমাদের ছাত্ররা প্রচলিত ধারার অনেক ক্ষেত্রে ভালো চাকুরী করছে। বক্তাগন পবিত্র কোরআন এবং ধর্মীয় শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে নূতন প্রজন্মকে এ শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে অভিভাবকদের আরো যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান। বাদ মাগরেব জেএমসির মূল ভবনে অনুষ্ঠিত অনাড়ম্বর এ গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ৭ জন হাফেজকে পাগড়ী পড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রদান করা হয় সনদ পত্র। চার পর্বে অনুষ্ঠিত গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার এবং অতিথিসহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন এবং তা চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। ধন্যবাদ প্রদান করেন বোর্ড অফ ট্রাস্টির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. হুমায়ুন আহমেদ এবং সমাপণী বক্তব্য প্রদান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জামিয়া কোরআনিয়া একাডেমির প্রিন্সিপাল হাফিজ মুজাহিদুল ইসলাম।