আজ শুক্রবার নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯

আজ শুক্রবার টাইমস স্কয়ারের ম্যারিয়ট মার্কুইস হোটেল যেন পরিণত হয়েছে বিশ্ববাণিজ্যের মিলনকেন্দ্রে। চারদিকেই ব্যস্ততা, আলো-ঝলমল পরিবেশ, আর উদ্যোক্তাদের মুখে উচ্ছ্বাস। শুরু হয়েছে চতুর্থ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও চেম্বার এক্সপো ২০২৫। এবারের মূল প্রতিপাদ্য—“অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি: একসঙ্গে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ।”
সকাল থেকেই নানা দেশের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক ও চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিদের পদচারণায় ভরে ওঠে হোটেল প্রাঙ্গণ। বাংলাদেশ থেকেও এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আসা উপদেষ্টা, সরকারি কর্মকর্তারাসহ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, আজকের দিনটি যেন বাংলাদেশের জন্যও এক নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে—আমাদের উদ্যোক্তারা বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছেন।
সকাল নয়টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং মার্কিন ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রশাসনের প্রশাসক কেলি ল্যাফলারের উপস্থিতিতি বৈশিষ্ট্যময় করে তুলেছে পুরো এক্সপোকে। গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বারের সভাপতি মার্ক জাফের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় একে একে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। উদ্বোধনের পর শুরু হয় বিশেষ আলোচনা, যেখানে বাংলাদেশি পোশাক শিল্প থেকে শুরু করে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন—সব ক্ষেত্রেই ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন অতিথিরা।
দিনভর একের পর এক সেশন যেন নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের প্রেরণার বাতিঘর। বিকেলে “মেড ইন বাংলাদেশ” ফ্যাশন শো মঞ্চে ওঠে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বৈশ্বিক সক্ষমতা। আর সন্ধ্যায় পালিত হয় “বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস,” যেখানে প্রবাসীদের গল্প উঠে আসে গর্ব আর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। দিন শেষে সঙ্গীত, নৃত্য আর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মেলার আবহকে রাঙিয়ে তোলে রঙিন উৎসবে।
ইতালি থেকে আসা সাংবাদিক এম এম রহমানসহ ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সাব্রিনা হোসেন, অলি খান, মাকসুদ রহমান, এমদাদুর রহমান চৌধুরী, ফায়সল আলম, মনসুর মাহবুব নিউইয়র্ক এক্সপোতে যোগ দিচ্ছেন। এক প্রতিক্রিয়া প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা প্রতিনিধিকে তারা জানালেন, নিউইয়র্কে এসে বাংলাদেশের প্রবাসী বিনিয়োগসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন লোকজনের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ হয়েছে। এ নিয়ে তারা আয়োজকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন।  
এক্সপোর আহ্বায়ক ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ এক আবেগঘন আহ্বানে বলেন, “প্রবাসীরা যদি বছরে মাত্র ২০০ ডলার সমাজসেবা ও উন্নয়ন খাতে দেন, তবে দেশের অর্থনীতিতে এটি হবে নতুন শক্তি। আজ আমরা দেখাচ্ছি, বাংলাদেশিরা শুধু শ্রমশক্তি নয়—আমরা বৈশ্বিক অর্থনীতির নেতৃত্বেও এগিয়ে যাচ্ছি।”
আজকের এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রমাণ করছে—বাংলাদেশিরা কেবল সাংস্কৃতিক মঞ্চেই নয়, এখন বিশ্ববাণিজ্যের প্ল্যাটফর্মেও নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। এটি একদিকে যেমন ব্যবসায়ী সমাজের জন্য আশার আলো, তেমনি নতুন প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণা—দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।