যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে ন্যাশনাল গার্ডকে রাস্তায় নামানোর সম্ভাবনা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন শহরের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শহরের রাস্তায় সেনা মোতায়েন করতে পারেন—এমন ধারণা তাকে “বিতৃষ্ণ” করে তুলেছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার ম্যানহাটনের মিডটাউনে এক অনুষ্ঠানে টিশ বলেন, ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা শহরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষিত নন, বরং তাদের নামানো হলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই মন্তব্য আসছে এমন সময়ে, যখন ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ বিভাগকে ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর এবার শিকাগো ও নিউইয়র্কে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন।
টিশ বলেন, “আমার অন্যতম বড় উদ্বেগ হলো—নিউইয়র্ক সিটিতে বা দেশের অন্য বড় শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করলে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা ও বিভ্রান্তি তৈরি হবে, যা উল্টো ফল দেবে। আজীবন নিউইয়র্কবাসী হিসেবে আমি রাস্তাঘাটে সামরিকীকরণের ধারণায় গভীরভাবে বিতৃষ্ণ।” অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিটিজেন্স বাজেট কমিশন, একটি নিরপেক্ষ আর্থিক তদারকি সংস্থা।
ফেডারেল সরকারের ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকলেও নিউইয়র্ক বা অন্যান্য বড় শহরের ক্ষেত্রে তা নেই। তবে প্রেসিডেন্ট চাইলে ফেডারেল ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় কিংবা এর বিশাল সাবওয়ে নেটওয়ার্কে দাঁড় করাতে পারেন, বলেন টিশ।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল ইতোমধ্যেই প্রায় ১,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে পরিবহন ব্যবস্থায় মোতায়েন করেছেন। তারা মূলত র্যান্ডম ব্যাগ চেক করেন, তবে সাবওয়ে ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মে টহল দেন না।
টিশ বলেন, নিউইয়র্কে অস্ত্র কমানোর ক্ষেত্রে ফেডারেল সহযোগিতা দরকার, বিশেষ করে অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় আরও বেশি ফেডারেল প্রসিকিউটর দরকার। তার ভাষায়, “আমাদের ফেডারেল সরকারের সঙ্গে সঠিক ধরনের অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে। ন্যাশনাল গার্ড সে সমাধান নয়।”
এনওয়াইপিডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটিতে সব প্রধান অপরাধ বিভাগেই অপরাধ কমেছে। মোট অপরাধের হার নেমেছে ৪.৫ শতাংশ। গুলির ঘটনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮৯-এ, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। টিশ বলেন, “শহরের নিরাপত্তা আমরা সামলাতে পারছি। এইভাবে আমাদের ফেডারেল সরকারের সাহায্য দরকার নেই, চাইও না।”
এদিকে পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরোও ফেডারেল সৈন্য মোতায়েনের সম্ভাবনার বিরোধিতা করেছেন। সোমবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট যা করছেন, তা সম্প্রদায়ের ভেতর বিশৃঙ্খলা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমি বলতে পারি, যদি তিনি ফিলাডেলফিয়ায় বা পেনসিলভানিয়ার অন্য কোনো এলাকায় সেনা মোতায়েন করতে চান, আমরা তার জন্য প্রস্তুত।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের চেষ্টা করা হয়, পেনসিলভানিয়ার যেকোনো সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে আমরা প্রস্তুত আছি।”